ডা. সেলিনা সুলতানা শিশুদের জন্য খেলাধুলা খুবই জরুরি। শিশুর বিকাশে সাহায্য করে খেলাধুলা। বিশেষ করে শিশুর জন্য দরকার স্বাধীন খেলাধুলা। উদাহরণের মধ্যে আছে- ছবি আঁকা, রং করা, পেইন্টিং, কাটিং ও আঁঠালো আর্ট দিয়ে জোড়া লাগানো, মেক-বিলিভ গেমস বা প্রিটেনড প্লে বা ড্রেসআপ খেলা। খেলার মাঠের সরঞ্জামে খেলা, আরোহণ বা ক্লাইম্বিং, দোলনা, চারপাশে দৌড়ানো। ফ্রি প্লে বা স্বাধীন খেলাধুলা শিশুদেরকে স্বাধীনভাবে চিন্তা করতে ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার দক্ষতা বিকাশ করতে সাহায্য করে। শিশুদের আগ্রহ ঠিক কোন বিষয়ে বেশি তা আবিষ্কারের সুযোগ প্রদান করে খেলাধুলা। ফ্রী প্লে বা স্বাধীন খেলাধুলা ভাষার বিকাশেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
এক্ষেত্রে শিশুরা একসঙ্গে খেোর ফাঁকে নিজের মধ্যে যোগাযোগের পরিধি বাড়ায়। পাশাপাশি তারা একে অপরকে এমন শব্দ ও বাক্যাংশ শেখায় যা তার অভিভাবকেরাও করতে পারেন না। খেলাভিত্তিক শিক্ষা একটি শিশুর সামাজিক ও মানসিক দক্ষতার বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দু’ধরনের খেলার ব্যবস্থা আছে- প্রাপ্তবয়স্কদের-নির্দেশিত খেলা ও শিশু-নির্দেশিত খেলা।
দুটিই শিশুর বিকাশের জন্য সমান গুরুত্বপূর্ণ। প্রাপ্তবয়স্ক-নির্দেশিত খেলার মধ্যে আছে- শিশুদের সঙ্গে স্পঞ্জ পেইন্টিং, বাগানে খেলা, বোর্ড গেমস খেলা, মৃৎশিল্পের ক্লাস বা আর্টক্লাসে নিয়ে যাওয়া, লুকোচুরি খেলা কিংবা একসঙ্গে রান্না করা ইত্যাদি। খেলা একটি সৃজনশীল কার্যকলাপ। শিশুরা প্রতিনিয়ত নিজেদের বিনোদনের জন্য নতুন নতুন গেম ও ক্রিয়াকলাপ নিয়ে চিন্তা করে। উদাহরণস্বরূপ, শিশুরা গল্প ও ঘটনা তৈরি করে নিজেদের মতো ও সেগুলো এমনভাবে কাজ করে যেন বাস্তবে তা ঘটছে। নির্মাণের খেলনা দিয়ে খেলার সময়, একটি বিল্ডিং এর নকশা তৈরি সৃজনশীলতা নিয়ে আসে। সব ধরনের খেলাই সৃজনশীল অভিব্যক্তির বিকাশ ঘটায়। আপনি কীভাবে আপনার ছোট শিশুকে সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করতে পারেন তা অবশ্যই জানতে হবে। একটি শিশুর সামাজিক দক্ষতা শেখার প্রথম উপায় হলো তাদের পিতামাতার সঙ্গে যোগাযোগ। এরপর ভাই-বোন বা বন্ধুদের সঙ্গে খেলার মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ গড়ে ওঠে। স্বাধীনভাবে খেলা চলাকালীন, শিশুরা অনেক সামাজিক দক্ষতা শেখে যেমন- অন্যদের সহযোগিতা করা, অন্য বন্ধুদের সঙ্গে খেলা, ভাবের আদান প্রদান, বন্ধুদের নিয়ে আলোচনা, নিয়ম মেনে চলতে শেখা ইত্যাদি।