সিরাজগঞ্জে একটি মামলার রায় হয়েছে। একজন স্কুলছাত্রীকে হত্যার দায়ে এক তরুণকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। কেন ছাত্রীকে হত্যা করেছিলেন তরুণটি? মেয়েটি তাঁর প্রেমের প্রস্তাবে
সাড়া দেয়নি, তাই। সাড়া না দেওয়ায় তরুণটি কী করেছিলেন? তিনি ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। ক্ষুব্ধ হয়ে ২০২১ সালের ৩ মে মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে ছুরি দিয়ে কুপিয়েছিলেন তাকে। এই আঘাতে মারা যায় মেয়েটি।
খুবই সাদামাটা লাগছে কি ঘটনাটা? কিংবা এ রকম খবরে অভ্যস্ত হয়ে গেছেন আপনি? সবুর করুন। ভেবে দেখুন, এ রকম আরও অনেক হৃদয়বিদারক ঘটনা আছে, যা নিয়ে আপনার মনে এখন আর কোনো প্রতিক্রিয়া হয় না।
ভাবুন একবার, একটি স্কুলপড়ুয়া মেয়ে মনের আনন্দে জীবন উপভোগ করছিল। এ সময় কোনো এক তরুণের মনে হলো, ‘বাহ! মেয়েটি তো দারুণ! ওর সঙ্গে প্রেম করতে হবে।’ দুজন মানুষ পরস্পরকে ভালোবাসলে প্রেম হয়। একজন প্রেমে পড়লে তা হয় একপক্ষীয় প্রেম। অন্যের সায় না থাকলে তাকে প্রেমই বা বলা হবে কেন? অথচ এই একপক্ষীয় প্রেমিক যখন অন্যজনকে প্রেমিকা হিসেবে না পান, তখন প্রেমিকপ্রবর তাকে হত্যা করার কথা ভাবেন। যে মানুষ প্রেম করার জন্য হৃদয় মেলে দিয়েছেন, তিনিই প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন বলে একজন নারীকে হত্যা করে ফেলবেন, কোনো যুক্তি দিয়েই এই আচরণের অর্থ খুঁজে পাওয়া যায় না।
এ রকম আরও কোন কোন বিষয়ে অভ্যস্ত হয়ে গেছি আমরা? কয়েকটির কথা বলি। মোবাইল ফোন হাতে আসায় অডিও কিংবা ভিডিওতে বন্ধুদের এমন কিছু কথা বা ছবি ধারণ করা হয়, যা আপত্তিকর। এরপর শুরু হয় ব্ল্যাকমেলিং। হাতে হাতে মোবাইল ফোন এসে যাওয়ায় যে যার মতো ব্যবহার করছে যন্ত্রটি। ইন্টারনেট সংযোগের কারণে অজায়গা-কুজায়গায় ঢুকে কারও কারও মনে অপরাধপ্রবণতা দেখা দেয়। নিজের অবদমিত আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করার জন্য তারা তখন বেছে নেয় নৃশংসতা, বেছে নেয় ছলাকলা। যার প্রতিফলন দেখা যায় সমাজজীবনে। চাইলে ইউটিউবে এমন সব নোংরা ছবি দেখা যায়, যা একসময় ভাবাও যেত না। সেই সব ঘটনাকেও অনেকে নিজের জীবনে প্রয়োগ করে।