সব সময়ই শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বেশি পরিমাণে সরকারি বিনিয়োগের পরামর্শ দেওয়া হয়। বেশি অর্থ খরচ করা গেলে উভয় খাতের উন্নতি ঘটবে। কিন্তু এখনো মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) মাত্র ২ থেকে ২ দশমিক ৩ শতাংশ পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ করা হয় এ দুটি খাতে। আরও বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের যৎসামান্য ওই বরাদ্দটুকুও পুরোপরি খরচ হয় না। সে জন্য বিশেষ করে করোনাকালে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ ও খরচ নিয়ে বেশ আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। তা সত্ত্বেও বাস্তবে খরচের ক্ষেত্রে তেমন কোনো অগ্রগতি নেই।
গত ৩০ জুন শেষ হওয়া সর্বশেষ ২০২১-২২ অর্থবছরের বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের ৮০ শতাংশ খরচ করতে পারেনি। বরাদ্দ বাস্তবায়নের হার সবচেয়ে খারাপ এমন মন্ত্রণালয়গুলোর মধ্যে রয়েছে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিভাগ ৭৬%, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ ৭০%, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ বিভাগ ৭৫%, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ ৭৯% অর্থ বাস্তবায়ন করতে পেরেছে। এই চারটি বিভাগের ১৫১টি প্রকল্পে গত অর্থবছরে সাড়ে ৩৭ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। মোট খরচ হয়েছে সাড়ে ২৪ হাজার কোটি টাকা।
এ নিয়ে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বছরের শুরুতে বিপুল বরাদ্দ দেওয়া হলেও শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত তা খরচ করতে পারে না। বছরের শেষ দিকে খরচ কমানো হয়। কিন্তু বছর শেষে তা–ও খরচ করতে পারে না স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাত। এই দুটি খাতের পর্যাপ্ত অর্থ খরচের সক্ষমতা নেই।’ তিনি আরও বলেন, ‘কোভিডের সময়ে শিক্ষা খাতের ক্ষতি হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতের দৈন্য দশা দেখেছি। এখন এই দুটি খাতের প্রকল্পগুলো বেশি বাস্তবায়িত হওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি।’