সিনেমার দৃশ্য ও ঘটনাকে প্রাণ দেয় আবহ সংগীত। অনেক ক্ষেত্রে আবহ সংগীতই ইঙ্গিত দেয় বিশিষ্ট কোনো চরিত্রের আগমন কিংবা প্রস্থানপর্ব। সুরটি সেই চরিত্রের কল্পনায় অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে ওঠে দর্শকের মনে। আবহ সংগীতের জগতে জীবন্ত এক কিংবদন্তির নাম হ্যান্স জিমার। জার্মান এ সংগীতকার ও সংগীত প্রযোজকের থলেতে এখন পর্যন্ত জুটেছে দুটি অস্কার ও চারটি গ্র্যামি। এছাড়া অন্যান্য পুরস্কারের তালিকাও দীর্ঘ। আমাদের কালে জীবিত ১০০ জিনিয়াস মানুষের একজন তিনি। বাখ, বিটোভেন, রিচার্ড ওয়াগনারের সংগীত ঐতিহ্যের উত্তরসূরি হিসেবে জিমারের অবস্থান নিশ্চয়ই ইতিহাস একসময় নির্দিষ্ট করবে।
জিমারের জন্ম ১৯৫৭ সালে। সংগীতে তার হাতেখড়ি হয় পিয়ানো দিয়ে। তবে সংগীতের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাজীবন খুব একটা সুখকর ছিল না জিমারের জন্য। নিয়মমাফিক পিয়ানো পাঠ নিতে বরাবরই অনীহা ছিল। তবে সংগীত জিমারকে ছাড়েনি, জিমারও ছাড়তে পারেননি সার্কেল অব ফিফথসের টান। জিমার স্বয়ং একজন স্বশিক্ষিত সংগীতকার। প্রথাগত কম্পোজিশনের নিয়ম বরাবরই চূর্ণ করে নতুন কোনো পথের অনুসন্ধান করেন তিনি। বাঁধাধরা কোনো নিয়মের বেড়াজালে তিনি আটকে থাকতে চাননি।
জিমারের ক্যারিয়ারের শুরুটা হয় ব্যান্ড দিয়ে। একাধিক ব্যান্ডে তিনি কি-বোর্ড ও সিনথেসাইজার বাজাতেন। আশির দশকে বিজ্ঞাপনের জন্য জিংগেল কম্পোজ করতে শুরু করেন জিমার। সে সময় প্রখ্যাত সংগীতকার স্ট্যানলি মেয়ার্সের সঙ্গে কাজ করেন তিনি। জিমার অ্যাকোস্টিক যন্ত্র ব্যবহারে পারদর্শী তো ছিলেনই, কম্পিউটারের মিউজিক সফটওয়্যার ব্যবহারেও পাকা হাত ছিল তার। জিমার ও মেয়ার্স যৌথভাবে অর্কেস্ট্রার সংগীতের সঙ্গে ইলেকট্রনিক সংগীতের ফিউশন করেন। লক্ষ্য, নতুন শব্দ তৈরি করা। মুনলাইটনিং, সাকসেস ইজ দ্য বেস্ট রিভেঞ্জসহ বেশ কয়েকটি সিনেমায় আবহ সংগীত তৈরি করতে মেয়ার্সের সঙ্গী হন জিমার।