১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতার পর, বঙ্গবন্ধু ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে বাংলাদেশে ফিরে আসেন। মাতৃভূমিতে ফিরে তিনি অর্থনীতির উন্নয়ন, অবকাঠামো নির্মাণ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক জোরদার করার দিকে মনোযোগ দিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ার দিকে মনোনিবেশ করেছিলেন। তাঁর পরিকল্পনা অনুযায়ী বাংলাদেশ বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু পাকিস্তানপন্থি ঘাতকরা তাঁকে সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা করতে দেয়নি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যকে হত্যার পর দেশের জনগণদের বন্দুকের মুখে রেখে বিভিন্ন স্বৈরাচারী শাসকরা ১৯৯০ সাল পর্যন্ত দেশ শাসন করে। তাদের মধ্যে আবার কেউ কেউ নিজেকে গণতন্ত্রের প্রবক্তা বলে দাবি করে, যা হাস্যকর। ১৯৯০ সালে এরশাদ সরকারের পতনের পর গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হলে বাংলাদেশের মানুষ সরকার পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে প্রতি পাঁচ বছর পর পর এক ধরনের নির্বাচনি সহিংসতার সাক্ষী হতে থাকে।
১৯৯১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের পর বাংলাদেশে একটি নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে খুব অল্প সময়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। ২০০৭ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সমর্থনে ভিন্ন ধরনের তত্ত্বাবধায়ক সরকার দেশ শাসন করেছে। আওয়ামী লীগ পরবর্তীতে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে ক্ষমতায় আসে।
২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর পিতার আজন্ম লালিত ‘সোনার বাংলা’ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পরিকল্পনা শুরু করেন। তিনি ধীরে ধীরে বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করতে সমর্থ হয়েছেন। ২০০৯ সালে যখন তিনি সরকার গঠন করেন, তখন বাংলাদেশের বাজেটের আকার ছিল ৮৭ হাজার কোটি টাকা। তবে গত সাড়ে ১৩ বছরে বাংলাদেশের বাজেটের আকার ছয় লাখ কোটি টাকা অতিক্রম করেছে, যা একটি বিস্ময়কর ব্যাপার। শেখ হাসিনা বছরের পর বছর বাজেটের আকার বাড়াতে শুরু করলেও অনেকে বাজেটকে অতি উচ্চাভিলাষী দাবি করে তাঁর পরিকল্পনার সমালোচনা করেছেন বিভিন্ন সময়। তাদের মতে, এই বিশাল বাজেট বাস্তবায়ন করার সক্ষমতা বাংলাদেশের ছিল না।