রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় নিয়মিত পানি সরবরাহ না করার অভিযোগ উঠেছে। রায়ের বাজার, আগারগাঁও, কালাচাঁদপুর পশ্চিম এলাকা, মিরপুর, বারিধারার নুরের চালা, ভাটারা, কুড়িল বিশ্বরোডসহ বিভিন্ন এলাকায় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। এসব এলাকার বাসিন্দারা বলছেন, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে তারা পানির সংকটে ভুগছেন। ঈদুল আজহার পর সমস্যার শুরু হয়। তবে পানি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা ওয়াসার আঞ্চলিক কার্যালয়গুলোতে অভিযোগ করেও কোনও প্রতিকার মেলেনি বলে জানিয়েছেন এসব এলাকার বাসিন্দারা।
অপরদিকে ওয়াসা কর্মকর্তারা বলছেন, বৃষ্টিপাত কম, জনসংখ্যা ও চাহিদা বাড়ার কারণে ভূগর্ভের পানির স্তর নিচে নামছে। এজন্য প্রায় ১০০-এর বেশি পানির পাম্প বিকল হয়ে পড়েছে। এছাড়া লোডশোডিংয়ের কারণেও পানির উৎপাদন ও সরবরাহ কমেছে। পাশাপাশি নতুন পাম্প বসানোর ও জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না । ফলে রেশনিং করেই চলতে হচ্ছে।
গত ১ আগস্ট, ঢাকা ওয়াসার কার্যালয়ে বারিধারায় অবস্থিত ৮ নম্বর আঞ্চলিক কার্যালয়ে অভিযোগ জানাতে আসেন স্থানীয়রা। তারা জানান, এ অঞ্চলের অধীনে নুরের চালা, পশ্চিম ভাটারা, হাজী মার্কেট, কুড়িল বিশ্বরোড এলাকা এবং উত্তর বাড্ডার কিছু অংশে নিয়মিত পানি পাওয়া যাচ্ছে না।
অভিযোগকারীদের মধ্যে একজন ভাটারার খন্দকার বাড়ির মোড় এলাকার বাসিন্দা মো আলী। তিনি বাংলা টিবিউনকে বলেন, ‘খন্দকার বাড়ি মোড়ে রাতে আধা ঘণ্টার মতো পানি পাই। এর পর আর সারাদিন খবর থাকে না। মাঝে তিন দিন এক নাগাড়ে পানি আসেনি। কোরবানির পর খেকে এ সমস্যা শুরু, এখনও সমাধান পাইনি। তাই আজ অভিযোগ জানাতে এসেছি।’
আরেক বাসিন্দা জানান, নুরেরচালা প্রাইমারি স্কুল এলাকায় পানির সংকট সবচেয়ে বেশি।
এ বিষয়ে এ কার্যালয়ের কর্মকতারা বলেন, পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় খিলবাড়ির টেক পানির পাম্পটি সম্পূর্ণ বন্ধ। এছাড়া, নয়ানগর এলাকার ফাসেরটেকসহ বেশ কয়েকটি পাম্পের উৎপাদন ক্ষমতা কমে গেছে। পাশাপাশি, বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে দিনে অন্তত তিন ঘণ্টা পানির উৎপাদন করা যাচ্ছে না।
নাম প্রকাশে একই কার্যালয়ের আরেক প্রকৌশলী বলেন, ‘একদিকে জনসংখ্যা বাড়ছে, নতুন নতুন ভবন হচ্ছে, আর পানির চাহিদা বাড়ছে। অপরদিকে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর ক্রমশই নিচে নামছে, পানির উৎপাদনও কমছে। পাশাপাশি বৃষ্টিপাত কম।ভূমির ওপর কংক্রিটের আচ্ছাদন বেড়ে যাওয়ায় পানির রিচার্জ কম। আমরা পাম্প বসানোর নতুন জায়গা পাচ্ছি না আর সরকারের নীতি হচ্ছে তারা পাম্পের জন্য জায়গা কিনবে না।’