ফ্রান্স ক্রিকেট খেলে—এ তথ্যই অনেকের কাছে নতুন। ফরাসিরা ফুটবলের পাগল। টেনিস, সাইক্লিং ও হ্যান্ডবলও খুব জনপ্রিয়। রাগবি আর বাস্কেটবলও চলে। তাই বলে ক্রিকেট?
ইংলিশ চ্যানেলের ওপারে ‘ক্রিকেটের জনক’দের দেশ বটে, আর এপারে ফরাসিদের বসত হলেও ক্রিকেট তাদের সেভাবে টানেনি। তবে গুস্তাভ ম্যাকিওনের মতো ক্রিকেটাররা থাকলে ফ্রান্সে ক্রিকেট জনপ্রিয় হতে বোধ হয় খুব বেশি সময় লাগবে না!
অলিম্পিকে ক্রিকেট একবারই খেলা হয়েছে, আর সেবারই রুপা জিতেছিল ফ্রান্স—১৯ আগস্ট ১৯০০ প্যারিস অলিম্পিকে। এর ১২০ বছর ১১ মাস ১৮ দিন পর ক্রিকেট মানচিত্রে খানিকটা জায়গা মেলে ফ্রান্সের।
গত বছরের ৫ আগস্ট জার্মানিতে ত্রিদেশীয় সিরিজে নিজেদের ইতিহাসে প্রথম আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলে ফ্রান্স। দেশটি এ সময়ের মাঝে ১৯৯৮ সালে আইসিসির সহযোগী সদস্য হয়, ২০০১ সালে আইসিসি ট্রফিও খেলেছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের কোনো পাতায় ফ্রান্সের নামটা স্থায়ীভাবে লিপিবদ্ধ হয়েছে আরও কিছুদিন পর।
২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইউরোপের আঞ্চলিক বাছাইপর্বে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ১৮ বছর ২৮০ দিন বয়সে সেঞ্চুরি তুলে নেন ফ্রান্সের গুস্তাভ ম্যাকিওন। ভেঙে ফেলেন হজরতউল্লাহ জাজাইয়ের গড়া আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে কম বয়সে সেঞ্চুরির রেকর্ড।
পরের ম্যাচে নরওয়ের বিপক্ষেও সেঞ্চুরি করে রেকর্ড বই আরও একবার নতুন করে লেখান ম্যাকিওন। এবার প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে টানা দুই সেঞ্চুরির রেকর্ড।
এ পর্যন্ত মাত্র পাঁচটি টি-টোয়েন্টি খেলা ম্যাকিওন এই সংস্করণে টানা চার টি-টোয়েন্টি ইনিংসে সবচেয়ে বেশি রান তোলার রেকর্ডও গড়েছেন। তাঁর এই পারফরম্যান্সই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের মানচিত্রে স্থায়ী জায়গা করে দিয়েছে ফ্রান্সকে। এবার সীমানাটা আরেকটু বাড়ল।
আইসিসির ছেলেদের মাস-সেরা ক্রিকেটারের জন্য মনোনীত সংক্ষিপ্ত তিনজনের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন ম্যাকিওন। ১৮ বছর বয়সী এই ফরাসি ওপেনার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ইংল্যান্ডের জনি বেয়ারস্টো ও শ্রীলঙ্কার প্রবাত জয়াসুরিয়ার সঙ্গে। ম্যাকিওনের মান এই তালিকা দেখে কিছুটা হলেও বোঝা যায়—সুইজারল্যান্ড, নরওয়ের মতো দলগুলো হয়তো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রতিষ্ঠিত শক্তি নয়, তবে টানা দুই ম্যাচে শতক তুলে নেওয়াও ছেলেখেলা নয়।