চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে পদ বঞ্চিত নেতা কর্মীরা কার্যত বিশ্ববিদ্যালয়টি বন্ধ করে দিয়েছিল। চট্টগ্রাম শহর থেকে যে শাটল ট্রেনটি শিক্ষার্থীদের নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে যাওয়া-আসা করে সেই ট্রেনটিও বন্ধ করে দিয়েছিল ছাত্রলীগের নতুন কমিটিতে পদ বঞ্চিত নেতা কর্মীরা। তারা ট্রেনের চালককে জোর পূর্বক আটকেও রাখেন। ফলে শাটল ট্রেন ছাড়েনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি গেটে পাহারা দেয় বিক্ষোভকারীরা। কোথাও কোথাও টায়ার পুড়িয়ে বিক্ষোভ করেন। কার্যত দেশের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ছিল। যদিও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখা ছাত্রলীগের সদ্য ঘোষিত কমিটির পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা আজ মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১টায় আন্দোলন প্রত্যাহার করেছেন। তবুও প্রশ্ন থেকে যায়- এ ধরনের আন্দোলন করে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করার দায় কার?
ছাত্রলীগের কমিটি কি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তৈরি করে? নিশ্চয়ই না। এটি ছাত্রলীগের অভ্যন্তরীণ বিষয়। ছাত্রলীগের কমিটিতে কে থাকবেন কে থাকবেন না তা নির্ধারণ করার দায়-দায়িত্ব সংগঠনের সংশ্লিষ্ট নেতা-নেত্রীর ওপর। এখানে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের কোনও ভূমিকা থাকার কথা নয়। অথচ সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের কথা বলে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষা কার্যক্রম অচল করে দেওয়া হয়েছে। একটি ছাত্র সংগঠনের কমিটি গঠনে যদি অনিয়ম হয়েই থাকে তাহলে সে ব্যাপারে সাংগঠনিক পর্যায়ে প্রতিবাদ জানানোই কার্যকর প্রক্রিয়া। কিন্তু কোন যুক্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দেওয়া হলো? কেউ কেউ মন্তব্য করেছেন এটি মূলত পদ বঞ্চিতদের দাবি আদায়ের একটি প্রক্রিয়া মাত্র। বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দিলে পদ বঞ্চিতদের দাবি গুরুত্ব পাবে। উপর মহলে পদ বঞ্চিতদের ব্যাপারে আলোচনা গুরুত্ব পাবে। কিন্তু প্রক্রিয়াটি কি আদৌ শোভন? সাধারণ শিক্ষার্থীদের জিম্মি করে, বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে দিয়ে কোনও ছাত্র সংগঠন যদি সাংগঠনিক দাবি আদায়ের চেষ্টা করে তা কি যুক্তিযুক্ত?