ইতিহাস বলে রঙিন মাছ বা অ্যাকোরিয়াম ফিশের বাণিজ্যিক চাষের শুরুটা অনেক আগে, চীন দেশে। সেই ৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে চীনের ‘সং ডিনেস্টি’ পিরিয়ডে ধনীদের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে রঙিন মাছ। যার পরিপ্রেক্ষিতে চীনে ৯৬৮-৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে রঙিন মাছ খাওয়ার ব্যাপারে কড়া নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। ১১৩৬ সালে সম্রাট হিয়াউ সাং গোল্ডফিশের ব্রিডিং শুরু করেন। ১৫১০ সালের দিকে রঙিন মাছের এই শৌখিনতা শুধু ধনীদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেনি। সাধারণ মানুষও অ্যাকোরিয়ামে রঙিন মাছ রাখতে শুরু করে। এরপর এই শৌখিনতা ছড়িয়ে পড়ে জাপানে। ইউরোপের দেশ হিসেবে প্রথম পর্তুগালে রঙিন মাছের চাহিদা দেখা যায় ১৬৯১ সালে। সেখান থেকে ছড়িয়ে পড়ে পুরো ইউরোপে।
একটা জার্নালে মৎস্য অধিদপ্তরের বরাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের রঙিন মাছ বা অ্যাকোরিয়াম ফিশের যাত্রা শুরু ১৯৫৩ সালে। কিন্তু এ দেশে রঙিন মাছ জনপ্রিয় হতে শুরু করে স্বাধীনতার পরে। আগে বড় বড় হোটেলে অ্যাকোরিয়ামে রঙিন মাছ রাখা হতো। তবে গত শতাব্দীর আশির দশকের মাঝামাঝি থেকে বাংলাদেশের উচ্চবিত্ত থেকে উচ্চমধ্যবিত্তরাও প্রেমে পড়ে শৌখিন মাছের। মনে আছে ১৯৮৫ সালের দিকে বিটিভির ‘মাটি ও মানুষ’ অনুষ্ঠানে শৌখিন মাছ নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রচার করেছিলাম। তখন থেকেই ধীরে ধীরে রাজধানীর কাঁটাবনে গড়ে উঠছিল শৌখিন মাছের বিশাল বাজার। তারপর সারা দেশেই ছড়িয়ে পড়ে। শুধু উচ্চবিত্তের মধ্যেই আর সীমাবদ্ধ থাকেনি রঙিন মাছের চাহিদা। মধ্যবিত্তের ঘরেও ঢুকে যায় কাচের পাত্রে রাখা সোনালি মাছের বিলাস। তবে এই বিলাসের রসদ ছিল সম্পূর্ণ আমদানিনির্ভর। যাঁদের হাত ধরে এ দেশে রঙিন মাছের উৎপাদন শুরু, তাঁদের একজন সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার ব্রজবঙ্গ গ্রামের তরুণ উদ্যোক্তা সাইফুল্লাহ গাজী।