বিশ্ব এখনো করোনা মহামারিতে ব্যতিব্যস্ত। মাঝে কমে গিয়েও আবারও চোখ রাঙাচ্ছে করোনা। বাংলাদেশে নতুন শনাক্ত হওয়া দৈনিক রোগীর সংখ্যা এখনো শ থেকে হাজারের কোঠায় ওঠানামা করলেও জাপানসহ কোনো কোনো দেশে তা ছাড়িয়েছে লাখের কোঠা।
এই সময় আমরা প্রস্তুত নিচ্ছি বঙ্গভ্যাক্সের ফেজ-১ ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল অনুষ্ঠানের জন্য। এখন আমাদের কাজ হচ্ছে এই ট্রায়ালের জন্য ৬০ জন ভলান্টিয়ার শনাক্ত করা যাদের আমরা দুটি গ্রুপে ভাগ করব।
এদের মধ্যে তিরিশ জনের বয়স হবে ১৮-৫৫ আর বাকি তিরিশ জনের বয়স ৫৫ এর বেশি। তাদের ২১ দিনের বিরতিতে দুই ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়া হবে। ভ্যাকসিন নেওয়ার পর তারা একদিন করে পর্যবেক্ষণে থাকবেন।
আমরা মনে করি, বঙ্গভ্যাক্সের কোনো রকমের সাইড ইফেক্ট হবে না। কারণ বানরের ট্রায়ালে আমরা দেখেছি এটি শতভাগ কার্যকর। কোনো সমস্যা হয়নি।
তাছাড়া এরই মধ্যে পৃথিবীতে বহু মানুষ এমআরএনএ ভ্যাকসিন (mRNA vaccine) পেয়েছেন। তারপরও আমাদের সকল প্রস্তুতি থাকবে। ভ্যাকসিন উৎপাদন আর ভলান্টিয়ার রিক্রুট শেষে আমরা ট্রায়াল সেপ্টেম্বর মাসে শুরু করতে পারব বলে আশা করছি।
ট্রায়াল শুরু হওয়ার ৩৫ দিন পর তা শেষ হবে। আমরা আশা করছি, অক্টোবরের মধ্যে দেশে উদ্ভাবিত ও উৎপাদিত প্রথম এমআরএন ভ্যাকসিনের প্রাথমিক তথ্য-উপাত্ত আমরা জানাতে সক্ষম হবো।
ট্রায়ালের ফেজ-১, ফেজ-২ ও ফেজ-৩ সম্পন্ন করার পর বঙ্গভ্যাক্স বাজারে আসবে। তবে অনেক ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি, ফেজ-৩ চলাকালীন সময়েও ভ্যাকসিন বাজারজাতের সরকারি অনুমোদন পেয়েছে।
এমনটি আমরা ভারত, আমেরিকা ও রাশিয়ায় দেখেছি। যদি আমাদের ভ্যাকসিন করোনার বিরুদ্ধে কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়, তাহলে আমরা আশাবাদী ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশের মানুষ তার প্রথম করোনা ভ্যাকসিন পেয়ে যাবে।
বঙ্গভ্যাক্স করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের বিরুদ্ধে শতভাগ কার্যকর। অমিক্রনের বিরুদ্ধেও তাই। অর্থাৎ ভাইরাসের চেহারা বদলাতে পারে। নতুন ভাইরাস আসতে পারে, কিন্তু আপনার যদি এমআরএনএ টেকনোলজি থাকে, আমরা সেই অনুযায়ী ভ্যাকসিন ডিজাইন করতে পারব।
শুধু ভাইরাসের সিকুয়েন্স জানার প্রয়োজন পড়বে। এমআরএন ভ্যাকসিনের আরেকটি বড় গুণ হচ্ছে এটি ব্যবহার করে সামনে পার্সোনালাইজড ক্যান্সার ট্রিটমেন্টেও যাওয়া যাবে।