দেশ গড়ার কারিগর মানুষ। উৎপাদনের শক্তিও মানুষ। সাধারণভাবে বলা চলে, জনসংখ্যা একটি দেশের সম্পদ। এই সম্পদের যথাযথ ব্যবহার তথা জনশক্তিকে কাজে লাগানোর মাধ্যমেই দেশ গড়ার কাজ স্বচ্ছন্দে এগিয়ে চলে। এখন এই জনসংখ্যাকে জনশক্তিকে রূপান্তর এবং দেশের মানুষের কী প্রয়োজন, তাদের প্রয়োজন কীভাবে মেটানো হবে, সেসব বিষয়ে মোটামুটি দক্ষভাবে কাজ করার জন্য জনসংখ্যা নির্ধারণ জরুরি। সেই জরুরি কাজটিই আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় চালু রয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর, সরকার জনসংখ্যা নির্ধারণে অন্যান্য দেশের মতো আমাদের এখানে আদমশুমারির কার্যক্রম শুরু করে। ১৯৭৪ সালে দেশে প্রথম আদমশুমারির পর দ্বিতীয় আদমশুমারি হয় ১৯৮১ সালে। এর পর প্রতি দশ বছর অন্তর জনসংখ্যা গণনার কার্যক্রম ধারাবাহিকভাবে চলতে থাকে। তবে রীতির বাইরে এসে এবারই এক বছর দেরিতে, এগারো বছরে জনসংখ্যা গণনার কাজ সম্পন্ন হলো। এই দেরির কারণ বৈশ্বিক অতিমারী। করোনাকালে জনসংখ্যা গণনার কাজটি নির্ধারিত সময়ে সম্পন্ন হয়নি। ফলে এক বছর দেরি। এর আগে আদমশুমারি হয়েছে ২০০১ এবং ২০১১ সালে আদমশুমারি ও গৃহগণনা অনুষ্ঠিত হয়। তবে এবার জনসংখ্যা গণনাকে আদমশুমারি বলা হয়নি, আমাদের পরিসংখ্যান আইন ২০১৩ অনুযায়ী আদমশুমারিকে জনশুমারি হিসে্েব অভিহিত করার বিধান জারি হওয়ায় এবারের জনসংখ্যা গণনার কার্যক্রম জনশুমারি হিসেবে চিহ্নিত।
চলতি বছরের ১৫ থেকে ২১ জুন মূল শুমারির তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এবার বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যার কারণে বন্যাদুর্গত এলাকায় গণনার সুবিধার্থে সময় বাড়ানো হয় ২৮ জুন পর্যন্ত। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী তথ্যসংগ্রহকারীরা সারাদেশে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ৩ লাখ ৯৫ হাজার স্মার্ট ট্যাব ব্যবহার করে তথ্য সংগ্রহ করে। এবারই প্রথম ডিজিটাল পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো ট্যাবে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করে, তা জিওগ্রাফিক ইনফরমেনশন সিস্টেম (জিআইএস) প্রযুক্তি।