দিনাজপুরে অবস্থিত হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ দীর্ঘদিন ধরে কমিটিবিহীন অবস্থায় চলছে। স্বীকৃত নেতৃত্ব না থাকায় সংগঠনে শৃঙ্খলা নেই। তবে অন্তঃকোন্দল আর নানা অপকর্মে জড়ানোর অভিযোগ আছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক–শিক্ষার্থীরা বলছেন, দিনাজপুরের সরকারদলীয় একাধিক রাজনৈতিক নেতার অনুসারী পরিচয়ে পাঁচটি উপদলে বিভক্ত ছাত্রলীগের রাজনীতি। পদ-পদবি না থাকলেও ক্যাম্পাসে এসব উপদলের নেতাদের নিয়ন্ত্রণ আছে। আর উপদলের ছত্রচ্ছায়ায় থাকা কর্মীদের অনেকের বিরুদ্ধে হলের সিট–বাণিজ্য, ছিনতাই, ভাঙচুর ও সংঘর্ষে জড়ানোর অভিযোগ রয়েছে। গত তিন বছরে আধিপত্য বিস্তার ও অন্তঃকোন্দলে ক্যাম্পাসে অন্তত এক ডজন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
সর্বশেষ গত ৩০ জুন শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব থেকে সংঘর্ষ ও আবাসিক হলে ব্যাপক ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আট শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি। তাঁদের ছয়জনকেই বিভিন্ন সময় ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে দেখা গেছে। কমিটির প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ বিধান চন্দ্র হালদার বলেন, শিগগির অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের অক্টোবরে সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়। ইফতেখারুল ইসলাম ওই কমিটির সভাপতি ও অরুণ কান্তি রায় সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ২০১৫ সালের এপ্রিলে বিশ্ববিদ্যালয়ে নবীনবরণ অনুষ্ঠানে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় সভাপতি-সম্পাদকের বিরুদ্ধে মামলা হয়। তাঁদের ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তার পর থেকে শুরু হয় গ্রুপিং। সর্বশেষ গত বছরের নভেম্বরে ওই কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এরপর নতুন কমিটি গঠনের জন্য পদপ্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত নেওয়া হলেও কোনো অগ্রগতি নেই।
ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা বলছেন, বর্তমানে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ পাঁচটি গ্রুপে বিভক্ত। এর মধ্যে রিয়াদ খান ও মোর্শেদুল আলমের দুটি গ্রুপ রয়েছে। অন্য তিনটি গ্রুপের নেতৃত্বে আছেন রাসেল আলভী, এস এইচ আকাশ ও মোস্তফা জামান।