আমাদের দেশে সম্পদের অভাব, সম্পদ সৃষ্টিতে সামাজিক উদ্যোগ চাই। চোখ খুললেই দেখতে পাব সম্পদ সৃষ্টির চেয়ে বড় হয়ে উঠেছে তৈরি-সম্পদের ব্যক্তিগত ব্যবহার। দালান ওঠে, বসবাসের সমস্যা সমাধান হয় না। ধনীর সংখ্যা যত বাড়ে সামাজিক মানুষের সংখ্যা ততই কমে। উন্নতি মানেই দাঁড়ায় ব্যক্তিগত ধন বৃদ্ধি। এই উন্নতির চাপে আমরা বড়ই বিব্রত, চাপা পড়ার আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন। প্রাকৃতিক সম্পদ বিপর্যস্ত, মানবিক সম্পদ বিপন্ন। এসবের সবটাই চালাক-চতুরদের কৃতিত্ব। তারাই করে।
উন্নতি ঘটছে সশব্দে এবং যতই তার দাপট বাড়ছে সামাজিক পরিসরটা ততই সঙ্কুচিত হয়ে আসছে। মানুষ অসামাজিক ও পরস্পরবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। উন্নয়ন ও বিচক্ষণতার গতিবিধি এখন রীতিমতো পরস্পরবিরোধী। উন্নয়ন উঠছে, বিচক্ষণতা নামছে। এর ভৈরবী, ওর বেহাগ। ভারসাম্য একেবারেই নেই। এই ঘটনা প্রাকৃতিক ভারসাম্যের অভাবের চেয়েও বিপজ্জনক। লক্ষণ মোটেই সুবিধার নয়। ভরসা কিন্তু শেষ পর্যন্ত নিরীহ ওই বিচক্ষণরাই।
বিচক্ষণতার চর্চা ও বিকাশের জন্য যে সামাজিক পরিসরগুলো অত্যাবশ্যক তাদের একটি হচ্ছে পাঠাগার। পাঠাগারে জ্ঞান ও প্রজ্ঞা উভয়েরই পরিচর্যা চলে সমানে। চালাক-চতুররা যে পাঠাগারমুখো হয় না তাতে ধরা পড়ে আগ্রহের দিক থেকে তারা কেমন ভিন্নধর্মী। পাঠাগার শিক্ষালয়ের চেয়েও সামাজিক ও উন্মুক্ত। এখানে শাসন নেই, চাপ নেই পরীক্ষার, অস্থিরতা নেই দ্রুত আহরণ-প্রতিযোগিতার।