এবারের জনশুমারি ও গৃহগণনা কার্যক্রম নিয়ে মিলছে বেশুমার অভিযোগ। রাজধানীসহ দেশের অনেক এলাকায় খানা পর্যায়ে গণনাকর্মীরা যাননি। কোনো কোনো বাসার দরজায় শুধু স্টিকার লাগিয়ে দিয়ে দায়িত্ব শেষ করেছেন গণনাকর্মীরা। বাদ পড়া অনেকেই বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জনশুমারি বিষয়ে নানা মন্তব্য ছুড়ছেন। গণমাধ্যমকর্মীদের কাছেও অনেকে নিজেদের বাদ পড়ার তথ্য দিচ্ছেন। এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্নিষ্টরা বলছেন, বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে।
মাঠ পর্যায়ে গণনা কার্যক্রমে গাফিলতির কারণে অনেকেই গণনা থেকে বাদ পড়েছেন। মূলত এ কারণেই এবারের প্রতিবেদনে এত বড় তথ্য বিভ্রাট হয়েছে। জনশুমারি সব সময় শুস্ক মৌসুমে পরিচালিত হয়। এবারই প্রথম গণনা কার্যক্রম বর্ষায় হলো। বর্ষার সঙ্গে বন্যা মিলে গণনা কার্যক্রম মারাত্মক ব্যাহত হয়েছে।
দুই বছর আগের বিবিএসের নিজস্ব এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯১ লাখ ১ হাজার। গত বছরের জুনে প্রকাশিত বাংলাদেশ স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস ২০২০ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। প্রতিবছরের তথ্য সমন্বয়ের মাধ্যমে স্যাম্পল ভাইটাল স্ট্যাটিসটিকস তৈরি করে থাকে বিবিএস। দুই বছর আগের তথ্যের চেয়ে গত বুধবার প্রকাশিত জনশুমারিতে দেশের জনসংখ্যা প্রায় ৪০ লাখ কম। আবার বিবিএসের জনমিতির হিসাবে দেশে প্রতি ১০ বছরে মানুষ বাড়ে দুই কোটির মতো। অর্থাৎ প্রতিবছর মানুষ বাড়ে ২০ লাখ। এ হিসাবে গত দুই বছরে আরও ৪০ লাখ জনসংখ্যা জনমিতিতে যুক্ত হওয়ার কথা। দুই হিসাব মিলে দেশে জনসংখ্যা হওয়ার কথা ১৭ কোটি ৩১ লাখ ১ হাজার জন।
এদিকে, এবার দেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি হতে পারে বলে শুমারির প্রস্তুতিবিষয়ক এক সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করেছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। ২০১১ সালের সর্বশেষ জনশুমারি অনুযায়ী জনসংখ্যা ছিল ১৪ কোটি ৪০ লাখ ৪৩ হাজার ৬৯৭ জন। প্রতি ১০ বছর পরপর এ শুমারি হওয়ার কথা। বিবিএসের তথ্য বলছে, প্রতি ১০ বছরে জনসংখ্যা গড়ে দুই কোটি বেড়ে থাকে। সর্বশেষ জনশুমারির পর ১১ বছর পার হয়েছে। সে হিসাবে এবারের জনশুমারিতে দেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি হতে পারে। পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম সমকালের সঙ্গে একই অনুমানের কথা জানিয়েছেন। আগামী তিন মাসের মধ্যেই শুমারির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেবে বিবিএস। ১৯৭৪ সাল থেকে শুরু হয়ে দেশে এ পর্যন্ত পাঁচটি জনশুমারি হয়েছে।