দেশে সংখ্যালঘু পীড়নের এক নতুন স্টাইল চালু হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে নানা জাতীয় পোস্টের মধ্যে কোথা থেকে যেন কোনো এক সংখ্যালঘু তরুণের নামে ধর্ম অবমাননাকর পোস্ট দেখা যায়। তারপর তা মুখে মুখে বা মোবাইল ফোনে বা মাইকে এলাকায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়- সংশ্নিষ্ট হিন্দু তরুণটি ধর্ম অবমাননা করেছে। কথা কয়টি মুখ থেকে বেরোনোর পর ফুরসত নেই; নিমেষেই এলাকাটি লোকে লোকারণ্য। সবাই উত্তেজিত। কারও হাতে লাঠি বা অন্য কোনো দেশীয় অস্ত্রও দেখা যায়। তারপর ভাঙচুর, হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, হতাহতের ঘটনা।
দেশের বিভিন্ন হিন্দুপল্লি এমন জমায়েতের সঙ্গে পরিচিত। তারা সবাই আতঙ্কে শিউরে ওঠে। আতঙ্কিত বোধ করে। কারণ, তারা তাদের জীবনের অভিজ্ঞতায় পাকিস্তান আমল থেকে আজতক এভাবে নিজেদের আক্রান্ত হতে দেখেছে। তখন হাজার ডাকলেও পুলিশ আসবে না; প্রশাসনের কেউ আসবে না। এমপি নন, চেয়ারম্যান নন- কেউ না। অসহায়ভাবে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসীদের একতরফা হামলার শিকার হতে হবে। অথচ এই দেশে তো জন্ম হিন্দুদেরও। এই একই দেশের সমধিকারের সাংবিধানিক স্বীকৃতিসম্পন্ন নাগরিক তো তারাও। তারা তো বেশি কিছু চাইছে না। চাইছে শুধু সংবিধান সব নাগরিকের যে অধিকার দিয়েছে সেটুকুই। সংবিধান তো বলেনি- হিন্দুরা এক ধরনের অধিকার ভোগ করবে; মুসলিমরা তার চেয়ে বেশি অধিকার ভোগ করবে; খ্রিষ্টানরা মুসলিমদের চেয়ে কম অধিকার ভোগ করবে; বৌদ্ধরাও তা-ই। না, এমন কোনো বিধান, এমন কোনো ধর্মীয় বৈষম্যমূলক বিধির অস্তিত্ব নেই আমাদের সংবিধানে। তবু রাষ্ট্র কেন বৈষম্যমূলক আচরণ করেই চলেছে?