ঢাকার বাইরে লোডশেডিংয়ের কোনো নিয়ম মানা হচ্ছে না। শিডিউল ভেঙে দেশের বিভিন্ন জেলার গ্রামে লাগামহীন লোডশেডিংয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গ্রামের কোথাও শিডিউল মানা হচ্ছে না। এক্ষেত্রে অভিযোগের তির পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলোর দিকে। সরকার ১ ঘণ্টা করে লোডশেডিংয়ের কথা বললেও পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের আওতাধীন ৭০টি সমিতির কেউ এটা মানছে না।
প্রতিদিন এসব সমিতির আওতাধীন এলাকায় গড়ে চার থেকে ৫ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ থাকছে না। কোথাও কোথাও ৮ থেকে ১০ ঘণ্টাও লোডশেডিং হচ্ছে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে বিস্তর সমালোচনা। এ কারণে মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পমালিকরা বিপাকে পড়ছেন। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ না পাওয়ায় তারা কারখানা চালাতে পারছেন না। ফলে শিল্পোৎপাদনে ধস নেমেছে। দিনের বেলায় বেশিরভাগ কারখানা বন্ধ করে দিতে হচ্ছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের নিজস্ব জেনারেটর দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে গিয়ে উৎপাদন ব্যয় সামাল দিতে পারছে না। গ্রামে গ্রামে ডিজেল সংকট দেখা দিয়েছে। ফলে সেচসহ গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যাঘাত ঘটছে।
বর্তমানে সারা দেশে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের ৭০টি সমিতি রয়েছে। এছাড়া পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট বোর্ডের (পিডিবি) আওতায় ৪টি অফগ্রিড এলাকায় ও পার্বত্য অঞ্চলের ২৬টি উপজেলায় বিদ্যুৎ বিতরণ করা হচ্ছে। খুলনা ও বরিশাল অঞ্চলে কাজ করছে ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, রংপুর রাজশাহী অঞ্চলে আছে নর্দান ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি (নেসকো)। আরইবির সমিতিগুলোর অভিযোগ, তারা প্রতিদিন চাহিদার অর্ধেকেরও কম বিদ্যুৎ পাচ্ছে।
এ কারণে তারা সরকারি শিডিউল মানতে পারছেন না। তাদের বক্তব্য, সাধারণ সময়েও সমিতিগুলো গড়ে ২ থেকে ৩ ঘণ্টা লোডশেডিং করে থাকে। এখন বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে গিয়ে তাদের প্রতিদিন গড়ে ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা লোডশেডিং করতে হচ্ছে। গরম বাড়লে এ লোডশেডিং আরও ১-২ ঘণ্টা বেড়ে যায়। এছাড়া নানা কারণে প্রতিদিন একাধিকবার লাইন ট্রিপ হয়। গ্রাহকরা সেটাকেও লোডশেডিং বলে চালিয়ে দিচ্ছেন। রোববার সারা দিন ঢাকা ও ঢাকার বাইরে হালকা বৃষ্টির কারণে লোডশেডিং কিছুটা কম হয়েছে। তারপরও গড়ে ৫ থেকে ৭ ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন ছিল ঢাকার বাইরের গ্রামগুলো।