বাংলাদেশে নিবন্ধিত যৌনপল্লিগুলোতে শিশুদের যৌনকর্মী হিসেবে পাওয়া যাচ্ছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ২০২২ সালের মানবপাচার প্রতিবেদনে এমন তথ্য দেওয়া হয়েছে।। মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) রাতে এ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
তবে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার ন্যূনতম মানদণ্ড পূর্ণ ভাবে অনুসরণ করতে না পারলেও আগের তুলনায় এগিয়েছে। পুলিশসহ সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কারণে মানবপাচার রোধ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। মানবপাচার রোধে পাচারকারীদের বিচারের আওতায় নিয়ে শাস্তির সংখ্যা বাড়ানোর পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের মতো এবারও বাংলাদেশ মানবপাচারের মানদণ্ডে টায়ার-২ বা ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় রয়েছে। মানবপাচার প্রতিরোধে বাংলাদেশে কিছু ক্ষেত্রে ন্যূনতম মানদণ্ড অনুসরণ করা হয় না। তবে মানবপাচার নির্মূলে আগের তুলনায় উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা রয়েছে সরকারের।
মূলত মানবপাচার রোধে সরকারের উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা করোনা মহামারিতে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় টায়ার-২-এ রয়েছে বাংলাদেশ। ২০২১ সালে আগের বছরের তুলনায় মানবপাচারের শিকার বেশ কিছু মানুষকে সরকার চিহ্নিত করেছে। তবে ভুক্তভোগীদের দেখভালের ব্যবস্থা অপর্যাপ্ত।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সার্বিক প্রচেষ্টা বাড়িয়েছে। ২০১২ সালের মানবপাচার প্রতিরোধ আইনের অধীনে এখন পর্যন্ত ৫৯৪টি মামলা তদন্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৩২টি যৌন পাচারের, ১৮২টি জোরপূর্বক শ্রম পাচারের এবং ২৮০টি মামলা অনির্দিষ্ট। এর বাইরে ৪৪৯টি মামলা তদন্তাধীন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কিছু পুলিশ কর্মকর্তা তদন্ত খুবই ধীর গতিতে এবং ত্রুটিপূর্ণ করে থাকেন, যাতে পাচারকারীরা শাস্তির সম্মুখীন না হয়। পুলিশের বিরুদ্ধে অর্থের বিনিময়ে ভুক্তভোগীদের পাচারকারীদের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। দেশের অভ্যন্তরে নিবন্ধিত যৌনপল্লিতে নির্যাতনের মতো বিষয়গুলো পুলিশ অর্থের বিনিময়ে এড়িয়ে যায়। যৌনপল্লিগুলোতে সবার বয়স নথি অনুযায়ী ১৮ বছরের ওপর। তবে নথিগুলো জাল। সেখানে ১০ বছরের মেয়ে শিশুদেরও পাওয়া গেছে। একটি সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, ৩০ হাজার মেয়েকে বাংলাদেশে যৌনপল্লিতে শোষণের শিকার হতে হয়। বিশেষজ্ঞদের ধারণা অনুযায়ী, বাংলাদেশে ২০ হাজার মেয়ে শিশুকে যৌনপল্লিতে যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করতে হয়।