আশি ও নব্বইয়ের দশকে যখন মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমার নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতি ও তার সশস্ত্র সংগঠন শান্তিবাহিনীর স্বর্ণযুগ, রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি জেলায় পাহাড়ি জনগণের মধ্যে তাদের নিরঙ্কুশ সমর্থন, তখনো কিন্তু বান্দরবান জেলায় তাদের কর্মকাণ্ড সীমিত গণ্ডিতে আবদ্ধ ছিল। আর তার কারণ ছিল মুরং (ম্রো) বাহিনী ও ম্রো সম্প্রদায়। আলীকদমভিত্তিক এই বাহিনী ও বান্দরবান জেলার প্রত্যন্ত এলাকায় বসবাসরত পিছিয়ে থাকা ম্রো জনগণ শান্তিবাহিনী বা জনসংহতি সমিতিকে গ্রহণ করেনি। ম্রো সম্প্রদায় সাংস্কৃতিকভাবে প্রশাসনঘনিষ্ঠ ও সাহসী।
সরকারের আস্থাভাজন মুরং বাহিনীর হাতে ওই সময় বান্দরবানে একাধিক সংঘর্ষে শান্তিবাহিনী পর্যুদস্ত হয়ে এলাকা ছাড়তে বাধ্য হয়। ফলে বান্দরবান জেলায় সরকারের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়া অপেক্ষাকৃত সহজ ছিল। এরই ধারাবাহিকতায় শান্তিচুক্তির পর বান্দরবানে উন্নয়নের সুফল হিসেবে পর্যটনক্ষেত্র দ্রুত প্রসার লাভ করে, যার সুফল জেলার সবাই পেতে শুরু করে। শান্তিচুক্তির কিছুদিন পর জেএসএস থেকে ইউপিডিএফ, জেএসএস সংস্কারপন্থী ইত্যাদি হয়ে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি আবার অশান্ত হতে শুরু করে; কিন্তু বান্দরবান সম্প্রীতির বান্দরবান হিসেবে চিহ্নিত হতে থাকে।