পৃথিবীর প্রাচীন অনেক ধর্মচিন্তার উৎস হিসেবে প্রকৃতির দুই বিপরীত শক্তির কথা নির্দেশ করা হয়। যেমন প্রাচীন মিসরীয় সভ্যতায় প্রধান দেবতা হয়ে যায় সূর্য। ‘রে’ বা ‘রা’ নামে যার পরিচিতি পায়। বলা হয় সকালের নরোম রোদ গাছের চারাগুলোকে লকলক করে বেড়ে উঠতে সাহায্য করে। আবার সেই সূর্যই মধ্যাহ্নের খরতাপে কোমল চারাকে পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়। নীলনদের বাহিত পলিতে কৃষিজমি উর্বরতা পায়, আবার বন্যায় ফুঁসে ওঠা নদী পাকা ফসল ভাসিয়ে নিয়ে যায়। তাই নদীকে, সূর্যকে তুষ্ট রাখার জন্য পূজার আয়োজন করে।
এখন আমাদেরও মনে হচ্ছে সমাজ জীবনকে মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য বিশেষ আরাধনার ব্যবস্থা করতে হবে। যে দেশ নিজেদের অর্থায়নে বিশ্বকে বিস্মিত করে দিয়ে পদ্মা সেতু বানাতে পারে, মেট্রোরেল চালুর প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলে, কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল তৈরি শেষ ধাপে, হু হু করে বাড়ছে মানুষের মাথাপিছু আয়; সেদেশই অবক্ষয়ের পথে সমাজ নিমজ্জনের পুরো আয়োজন যেন করে ফেলেছে! তাহলে ভালো এবং মন্দের চিরকালীন সংঘর্ষে আমাদের পরিণতি কী?
দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির অপচর্চায় উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো অস্বস্তিকর অবস্থার মধ্যদিয়ে দিন কাটাচ্ছে। এখন স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় সর্বত্র অন্ধকার হঠাৎ করে অনেক গাঢ় হয়ে যাচ্ছে ক্রমে। এখন ছাত্র দ্বারা শিক্ষক লাঞ্ছনা যেন নৈমিত্তিক হয়ে উঠেছে। সমাজ বিজ্ঞানী রাজনীতির গুণীজনরা এসব নিয়ে নিশ্চয়ই ভাবছেন এবং অন্ধকার থেকে বেরিয়ে আসার পথও নিশ্চয় খুঁজে বের করেছেন। তবে ফলাফলটা আমরা এখনো দেখতে পাইনি।