পূর্ণিমার কারণে সৃষ্ট অস্বাভাবিক জোয়ারে দক্ষিণের উপকূলবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সাতক্ষীরার শ্যামনগরে ১১টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে আছে পাঁচ হাজার পরিবার। বরগুনার তালতলীতে বাঁধ ভেঙে সাতটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। মানুষ খাবারের সংকটে পড়েছে।
বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় নদী উপচে প্লাবিত হয়েছে গ্রামের পর গ্রাম। ফেরির আশপাশের এলাকা পানিতে ডুবে থাকায় জোয়ারের সময় যোগাযোগ বন্ধ থাকছে। আচমকা এই বিপর্যয়ে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে বহু মানুষ। পা?নিমগ্ন এলাকাগুলোতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে চাষাবাদে। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দাবি, বেশির ভাগ জমিতেই পচে নষ্ট হয়ে গেছে ধানের বীজতলা ও সবজি।
বরগুনার তালতলী উপজেলার তেঁতুলবাড়িয়া বাঁধ ভেঙে সাতটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এখনো ঢুকছে জোয়ারের পানি। চার দিন ধরে এসব গ্রামে শুকনা খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। গতকাল শনিবার পায়রা (বুড়িশ্বর) নদীর পানি স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে বিপত্সীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
পানিতে তলিয়ে থাকা এলাকাগুলোর বাসিন্দারা বিশুদ্ধ পানির খোঁজে গ্রামের পর গ্রাম ছুটে চলছে। বেশির ভাগ ডিপ টিউবওয়েল পানিতে তলিয়ে থাকায় উঁচু স্থানের টিউবওয়েল থেকে পানি সংগ্রহ করছে সবাই। ঠিকমতো রান্না করতে পারছে না মানুষ।
তালতলী উপজেলার নিদ্রাসকিনা গ্রামের আকলিমা ও জোলেখা বেগম জানান, বসতঘর জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় চার দিন ধরে তাঁদের চুলা জ্বলছে না। এখনো পানি কমেনি। পরিবারে বয়োবৃদ্ধসহ শিশুদের নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে।
তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের ষাট বছরের বৃদ্ধ সোলায়মান মাঝি বলেন, ‘পাঁচ দিন ধরে পরিবারের সদস্যদের জন্য পাশের গ্রামের আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ি থেকে খাবার রান্না করে আনছি। এ ছাড়া এলাকার বেশির ভাগ ডিপ টিউবওয়েল পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় লবণ পানি ঢুকে পড়েছে। তাই বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকটে ভুগছে হাজারো মানুষ।
বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নুরুল ইসলাম মুঠোফোনে কালের কণ্ঠকে বলেন, পানি কমে গেলেই তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের ভাঙা বাঁধ সংস্কারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।