স্বাস্থ্যসেবায় ওষুধ অপরিহার্য। করোনার সংক্রমণ, ডেঙ্গুজ্বরের বিস্তারে মানুষের স্বাস্থ্যকেন্দ্রিক জটিলতা বেড়েছে। এরই মধ্যে প্রাথমিক চিকিৎসায় বহুল ব্যবহৃত ২০টি জেনেরিকের ৫৩ ব্র্যান্ডের ওষুধের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। নতুন নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী প্যারাসিটামলের ৫০০ এমজির প্রতিটি ট্যাবলেট ৭০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে এক টাকা ২০ পয়সা। কিছু ওষুধের দাম বেড়েছে ১০০ শতাংশেরও বেশি। অর্থাৎ আগে যে দামে ওষুধ কেনা যেতো, এখন তার চেয়ে দ্বিগুণ টাকা গুনতে হবে।
জানা গেছে, গত ৩০ জুন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত ওষুধের মূল্যনির্ধারণ কমিটির ৫৮তম সভায় এসব ওষুধের পুনর্নির্ধারিত দাম অনুমোদন করা হয় বলে জানিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। তবে এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেনি অধিদপ্তর। সর্বশেষ ২০১৫ সালে কয়েকটি ব্র্যান্ডের ওষুধের দাম বাড়ানো হয়েছিল। প্রায় সাত বছর পর আবারও বাড়ানো হচ্ছে অতিপ্রয়োজনীয় ওষুধের দাম।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র জানিয়েছে, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার জন্য তালিকাভুক্ত ১১৭টি ওষুধের দাম বাড়ানোর ক্ষমতা থাকে সরকারের হাতে। ওষুধ উৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামাল, এক্সিপিয়েন্ট, প্যাকেজিং ম্যাটেরিয়াল, পরিবহন ও ডিস্ট্রিবিউশন ব্যয়, ডলারের বিনিময়মূল্য, মুদ্রাস্ফীতিসহ নানা কারণে ওষুধের খরচ বেড়েছে। এসব কারণে ওষুধের দাম বাড়ানো হয়েছে।
জানতে চাইলে ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আইয়ুব হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকেই নিত্যপ্রয়োজনীয় তালিকাভুক্ত ওষুধের দাম নির্ধারণ করে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর। এ ওষুধের দাম পুনর্মূল্যায়ন করে সেগুলোর নতুন দাম নির্ধারণ করার বিষয় রয়েছে। ওষুধের দাম আচমকা বাড়ানো হয়েছে বিষয়টা এমন নয়। অনেকদিন ধরে দামের পুনর্মূল্যায়ন হয়নি।’
তিনি বলেন, ‘কাঁচামালের দাম বাড়ানোসহ নানা কারণে বাজারে ওষুধের স্বল্পতা দেখা দিয়েছে। কোম্পানিগুলো কিছু ওষুধ উৎপাদনে উৎসাহিত হচ্ছে না। সবকিছু পর্যালোচনা করেই ওষুধ প্রশাসনের দাম নিয়ন্ত্রণ কমিটির পরামর্শক্রমে সরকার এ ওষুধগুলোর দাম আপডেট করেছে।’
এদিকে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ওষুধের দাম বাড়ানোর ঘোষণা না দেওয়া হলেও ফার্মেসিতে বেশি দামেই বিক্রি হচ্ছে তালিকায় থাকা ৫৩ ব্র্যান্ডের ওষুধ। শনিবার (১৬ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ফার্মেসি ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে।