২০১৪ সালে বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশি দামে চামড়া বেচাকেনা হয়েছিল। তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদের নির্দেশে চামড়া ব্যবসায়ীদের তিন সংগঠন—বাংলাদেশ প্রস্তুত চামড়া, চামড়াপণ্য ও জুতা রপ্তানিকারক সমিতি (বিএফএলএলএফইএ), বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) এবং বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন ঢাকায় প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করে ৭০–৭৫ টাকা। ঢাকার বাইরে দর ছিল ৬০–৬৫ টাকা। তবে শেষ পর্যন্ত কোরবানির ঈদের দিন পুরান ঢাকার লালবাগের পোস্তায় লবণবিহীন প্রতি বর্গফুট চামড়াই বিক্রি হয় ৯০–১০০ টাকায়।
এর পরের আট বছর কোরবানির পশুর চামড়ার দাম দফায় দফায় কমেছে। কোনোবারই নির্ধারিত দামে চামড়া বেচাকেনা হয়নি। ২০১৯ সালে তো কোরবানির চামড়া নিয়ে একধরনের বিপর্যয় ঘটে যায়। দাম না পেয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চামড়া ফেলে দেন অনেকে। মাটিতে পুঁতে ফেলার ঘটনাও ঘটে। তখন বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছিল। এরপর বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নানামুখী উদ্যোগ নেয়। গত দুই বছর বিপর্যয় না হলেও খুবই কম দামে কোরবানির চামড়া বিক্রি হয়। চলতি বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ঈদের দিন গত রোববার পুরান ঢাকার পোস্তায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত দামের চেয়ে কম দামেই কাঁচা চামড়া বিক্রি হয়েছে।
গত সপ্তাহে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে ঢাকায় লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ৪৭ থেকে ৫২ টাকা নির্ধারণ করে। ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৪ টাকা। এ ছাড়া খাসির চামড়া প্রতি বর্গফুট ঢাকায় ১৮ থেকে ২০ টাকা, বকরির চামড়া প্রতি বর্গফুট ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকার বাইরে ও ঢাকায় বকরি ও খাসির চামড়ার দাম একই রাখা হয়। গতবারের তুলনায় চলতি বছর প্রতি বর্গফুট গরুর চামড়া ৭ টাকা এবং খাসির চামড়ায় ৩ টাকা বাড়তি দাম নির্ধারণ করে মন্ত্রণালয়।
ঈদের দিন দুপুরের পর পোস্তায় ছোট আকারের গরুর চামড়া ২০০–২৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মাঝারি আকারের গরুর চামড়া মানভেদে ৩০০–৭৫০ টাকা এবং বড় আকারের গরুর চামড়া ৮০০–১১৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অধিকাংশ আড়তদার ছোট আকারের গরুর চামড়া এবং খাসি ও বকরির চামড়া কিনতে অনীহা দেখান। ছোট আকারের গরুর চামড়া কেউ বিক্রি করতে আনলে ১০০ টাকা দামও বলেছেন ব্যবসায়ীরা। খাসি ও বকরির চামড়া বিক্রি হয়েছে ১০ টাকায়।