সাধারণত প্রচুর পরিমাণে শুকনা মরিচের গুঁড়া, তেল ও মসলা দিয়ে কোরবানির মাংস রান্না করা হয়। মাংস যথেষ্ট সুস্বাদু করার চেষ্টা চলে। কিন্তু আমরা ভুলে যাই যে মাংসেও প্রাকৃতিক তেল রয়েছে, তাই অতিরিক্ত তেলে মাংস রান্না করা অযৌক্তিক বা অনুচিত
শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখার অন্যতম শর্ত হচ্ছে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে সুষম খাবার গ্রহণ করা। প্রতি মুহূর্তে শরীরের যেসব কোষ ক্ষয় হচ্ছে তা পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজন যথাযথ পুষ্টি। সে জন্য পুষ্টির সব উপাদান থেকে সঠিক পরিমাণে খাবার গ্রহণ করতে হবে।
কেন ও কতটুকু লাল মাংস খাব?
প্রতিদিন একজন সুস্থ ব্যক্তি কতটুকু প্রোটিন খাবেন সেটা নির্ভর করে ওই ব্যক্তির আদর্শ ওজনের ওপর। একজন ব্যক্তির আদর্শ ওজন যদি ৬০ কেজি হয়, তাহলে তিনি প্রতিদিন ৬০ গ্রামের মতো প্রোটিন গ্রহণ করতে পারবেন। কিডনি রোগসহ বিশেষ বিশেষ কিছু রোগে এই পরিমাণ আক্ষরিকভাবে কমতে থাকবে। আবার মেয়েদের মাসিক চলাকালে ও গর্ভকালীন এই প্রোটিনের চাহিদা প্রায় দ্বিগুণ হারে বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।
গরুর মাংস থেকে প্রোটিন, ভিটামিন-বি১, বি৩, বি৬ ও বি১২, জিংক, সেলেনিয়াম, ফসফরাস ও আয়রন ভালো পরিমাণে পাওয়া যায়। এই পুষ্টি উপাদানগুলোর স্বাস্থ্যগত উপকারিতাও অনেক। ১০০ গ্রাম মাংসে ৭৪.৩ গ্রাম জলীয় অংশ, ১১৪ কিলোক্যালরি খাদ্যশক্তি, ১০ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ০.৮ মিলিগ্রাম লোহা, ০.১৫ মিলিগ্রাম ভিটামিন-বি১, .০৪ মিলিগ্রাম, ভিটামিন-বি২ ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়।
তবে কারোরই দিনে ৭০ গ্রামের বেশি মাংস খাওয়া উচিত নয়। গরুর মাংস খাওয়ার নিরাপদ মাত্রা হলো সপ্তাহে দুই দিন বা সপ্তাহে মোট তিন থেকে পাঁচ বেলা। প্রতি বেলায় ঘরে রান্না করা মাংস ১৫ গ্রাম, ২৫ গ্রাম বা ২-৩ টুকরার বেশি খাবেন না।
প্রতি ১০০ গ্রাম লাল মাংসে প্রায় ২৩ গ্রামের মতো প্রোটিন ও ২.৫ গ্রামের মতো ফ্যাট থাকে। কিন্তু ওই ব্যক্তি যদি হিসাব মেলাতে প্রতিদিন প্রোটিনের অন্য সব উৎস বাদ দিয়ে শুধু ২৬০ গ্রামের মতো লাল মাংস গ্রহণ করেন তাঁর ৬০ গ্রাম প্রোটিনের চাহিদা পূরণে, এটি তাঁর জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করবে।