প্রতিবছরই যেকোনও উৎসবে কর্মস্থল থেকে বাড়ি ফিরতে গেলে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। এটি এখন একপ্রকার নিয়মে পরিণত হয়েছে। এই ভোগান্তি কখনও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়, কখনও যানবাহনের সংকট, আবার কখনও সড়কে অব্যবস্থাপনা। সব ভোগান্তিই মানুষসৃষ্ট। কিন্তু কেন— এ প্রশ্ন এখন সবার।
অভিযোগ আছে, সরকার তথা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলা, দায়িত্ব পালনে উদাসীনতা, কর্মদক্ষতার অভাব, খামখেয়ালিপনা, অতিরিক্ত লোভের প্রবণতা এই ভোগান্তির কারণ। নানা ধরনের ভোগান্তি পেরিয়ে সাধারণ মানুষ যখন বাড়িতে ফেরেন অথবা বাড়ি থেকে কর্মস্থলে ফেরেন, সেই বছর কেটে গেলে পরের বছর আবারও সেই একই ধরনের ভোগান্তি শুরু হয়। অতীতের কোনও অভিজ্ঞতা কাজে লাগান না সংশ্লিষ্টরা। এমন অভিমত ভুক্তভোগীদের।
রাজধানীতে একটি বেসরকারি ব্যাংকে কাজ করেন সাখাওয়াত হোসেন। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে গ্রামের বাড়ি যাবেন কোরবানি করতে। গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে গাড়ি নেই। তাই শনিবার সকাল ৬টা থেকে গাড়ির অপেক্ষায় বসে আছেন তিনি। কখন আসবে গাড়ি তা কেউ জানেন না। আগাম টিকিট কিনতে পারেননি সাখাওয়াত। কারণ বেতন-বোনাস হাতে না পেলে কোন ভরসায় আগাম টিকিট কিনবেন? যখন বেতন-বোনাসের টাকা হাতে পেলেন, ততোক্ষণে সময় শেষ। যদি গাড়িতে সিট মেলে?- এই ভরসায় বসে আছেন বগুড়া যাবেন বলে। এ ধরনের হাজার হাজার সাখাওয়াত বৃহস্পতিবার রাত থেকে আবার কেউ কেউ শুক্রবার ভোর ৫টা থেকে রাজধানীর বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড, কমলাপুর রেলস্টেশন, এমনকি লঞ্চঘাটে বসে আছেন পরিবার-পরিজন নিয়ে। নানা ধরনের ভোগান্তিকে জয় করে এদের বেশিরভাগ বাড়ি যেতে পারলেও কোনও কুলকিনারা করতে না পেরে অনেকেই বাসায় ফিরে আসেন এমন নজিরও রয়েছে।