কোরবানির শাব্দিক অর্থ হচ্ছে ত্যাগ। পবিত্র ইসলামের চতুর্থ রোকন পবিত্র হজ পালনের অংশ হিসেবে জিলহজ মাসের ১০ তারিখে পশু উৎসর্গের মাধ্যমে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পরম ত্যাগের আদর্শ স্থাপন এবং মহান আল্লাহর নৈকট্য লাভে নিজের মনের সব আকুতি নিবেদন করেন। ওই কারণেই প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) কোরবানির ঈদ পালন করেছেন এবং সামর্থ্যবান কোরবান বর্জনকারীদের সম্পর্কে সতর্কবার্তা নির্দেশিত করেছেন। তিনি বলেন, 'যে ব্যক্তি সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও কোরবানি করে না সে যেন আমাদের ঈদগাহে না আসে।' কোরবানির স্বীকৃতি প্রদান করে মহান আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছেন, 'আমি প্রত্যেক উম্মতের জন্য কোরবানির এক বিশেষ রীতি-পদ্ধতি নির্ধারণ করে দিয়েছি, যেন তারা ওসব পশুর ওপর আল্লাহর নাম নিতে পারে যে সব আল্লাহ তাদের দান করেছেন।' (সুরা আল হজ্জ-৩৪)
রাসুল (সা.) আরও বলেছেন, 'কোরবানির দিনে আল্লাহর নিকট রক্ত প্রবাহিত (কোরবানি করা) অপেক্ষা প্রিয়তর কোনো কাজ নেই। অবশ্যই কেয়ামতের দিন (কোরবানিদাতার পাল্লায়) কোরবানির পশু তার শিং, পশম, তার ক্ষুরসহ হাজির হবে। কোরবানির রক্ত মাটিতে পতিত হওয়ার আগেই আল্লাহর দরবারে পৌঁছে যায়। তাই তোমরা প্রফুল্ল মনে কোরবানি করো।' (তিরমিযি, ইবনে মাজাহ)। নির্দিষ্ট বয়সী গরু, মহিষ, উট, ভেড়া, ছাগল ও দুম্বা ছাড়া অন্য কোনো পশু দিয়ে কোরবানি ইসলামে অনুমোদন নেই। দৈহিক ত্রুটিযুক্ত পশু যেমন- কানা, খোঁড়া, কানকাটা, লেজ কাটা, শিং ভাঙা ও পাগল পশু দ্বারা কোরবানি করা নিষিদ্ধ। (শামি, পঞ্চম খণ্ড) মহানবী (সা.) প্রিয় কন্যাকে কোরবানি সম্পর্কে বলেছেন, 'হে ফাতিমা! আপন কোরবানির নিকট যাও। কোরবানির প্রথম রক্তবিন্দুতে তোমার সমস্ত গুনাহ মাফ হবে এবং জন্তুটি কেয়ামতের দিন সমুদয় রক্ত, মাংস ও শিং নিয়ে উপস্থিত হবে এবং তোমার আমলের পাল্লা ৭০ গুণ ভারী হবে।' (ইসবাহানি)