শিরোনামে যা লিখেছি তা আক্ষরিকভাবে গ্রহণ করুন। এর মধ্যে প্রতীকী কিছু খুঁজতে যাবেন না; খুঁজলে সময় নষ্ট হবে, কিছুই পাবেন না, ঠকবেন। বেশ তো ভারত আর পাকিস্তানের কথা বলছি। বাংলাদেশ নেই কেন নেই কারণ প্রতীকী-প্রবণতা আমাদের বেশি, গুরুত্বপূর্ণ কেউ না কেউ ভেবে বসবেন রাষ্ট্রীয় অর্থে শুমারিটা আসলে তাকে নিয়ে। এটা যে তিনি নন কিংবা তাকে নিয়ে নয় বোঝাতে বোঝাতে নাভিশ্বাস উঠবে।
নাসিরুদ্দিন হোজ্জার নাম নিয়ে শুরু করি। বস্তাভর্তি আলু-পটোল গাধার পিঠে চাপিয়ে হোজ্জা বাজারে রওনা হলেন। বেচে হাতে কিছু নগদ টাকা রাখবেন। বস্তাটা ভারী। কিছুদূর গিয়ে গাধা থেমে গেল, আর যাবে না। বহু তোষামোদ করলেন, গাধা এক ইঞ্চিও এগোল না। সুতরাং একটা লাঠি নিয়ে গাধাটাকে পেটাবেন বলে মনস্থির করলেন। মারের নাম বাবাজি। গাধাকে কয়েক ঘা লাগানোর পরই আশপাশে অনেক মানুষ জমে গেল। তারা অসন্তুষ্ট হয়ে হোজ্জাকে গালমন্দ করতে শুরু করল। একজন বলল, ‘কেমন অমানুষ তুমি হোজ্জা, নিরীহ গাধাকে কেউ এভাবে পেটায়?’ দ্বিতীয় জন বলল, ‘গাধা একটা বোবা প্রাণী, মুখ ফুটে কিছু বলতে পারছে না বলেই তোমার এই অত্যাচার।’ তৃতীয় জন বলল, ‘পুলিশ ডেকে এখনই হোজ্জাকে সোপর্দ করো, তার বিরুদ্ধে ক্রুয়েলটি টু অ্যানিমেল অ্যাক্টের মামলা হবে।’ এ ধরনের বহু মন্তব্য শোনার পর হোজ্জা গাধাটার কাছে এসে পিঠে হাত রেখে বললেন, ‘আহারে গাধা, আমি যদি আগে জানতাম তোর এত আত্মীয়স্বজন, তোর পরিবারটা এত বড়, তাহলে আমি কখনো লাঠি হাতে নিতাম না।’ তার কথা শেষ হতেই দেখা গেল গাধার শুভানুধ্যায়ীদের একজনও আশপাশে নেই। হোজ্জার গাধার আত্মীয়স্বজন দ্রুত সটকে পড়লেও বাংলাদেশি গাধার স্বজনরা যে সহজে নড়বেন না এটা মানতেই হবে।