এবারের ঈদ যাত্রায় বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয় গত ২৪ জুন থেকে। আর রেলের টিকিট বিক্রি শুরু হয় ১ জুলাই থেকে। এরই মধ্যে সব বড় রুটে বাসের অগ্রিম টিকিট শেষ হয়ে গেছে। আর রেলের টিকিটের জন্য চলছে হাহাকার। সারা রাত অপেক্ষা করেও স্টেশনে রেলের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে না। চাহিদার তুলনায় টিকিট কম হওয়ায় অনলাইনেও টিকিট মিলছে না।
গতকাল রবিবার ঢাকার রেলস্টেশনগুলোতে ছিল টিকিটপ্রত্যাশীর উপচে পড়া ভিড়। এদিন দেওয়া হয় আগামী বৃহস্পতিবারের টিকিট। ১০ জুলাই রবিবার ঈদ হওয়ায় বৃহস্পতিবার ঢাকা ছাড়বে বেশির ভাগ মানুষ। তাই ওই দিনের টিকিটের চাহিদাও বেশি।
ঢাকা (কমলাপুর) রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, সকাল ৮টায় টিকিট বিক্রির জন্য কাউন্টার খোলা হলেও মধ্যরাত ও ভোর থেকেই শত শত মানুষ টিকিটের জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। চাহিদার তুলনায় টিকিট কম হওয়ায় বেশির ভাগ মানুষকে টিকিট না নিয়ে ফিরে যেতে হয়েছে। ভোর সাড়ে ৪টায় স্টেশনে এসে ১৭২ নম্বর সিরিয়ালে দাঁড়িয়েছেন জলিল হোসেন। তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার অফিস ছুটি হবে, ওই দিনই বাড়ি যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু ভোরে এসেও টিকিট পেলাম না। সিরিয়ালের সামনে থাকা ৩০ থেকে ৪০ জন যেতেই নাকি টিকিট শেষ হয়ে গেছে। ’
গতকাল টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার প্রথম ঘণ্টায় ঢাকা থেকে অনলাইনে বিক্রি হয়েছে প্রায় ১০ হাজার ৬০০টি টিকিট। আর কাউন্টারে বিক্রি করা হয়েছে চার হাজার ৭১১টি টিকিট।
আগের দিন থেকে কমলাপুরে নারীদের জন্য একটি কাউন্টার বাড়ানো হয়। তবু দুই কাউন্টারে চাপ সামলানো সম্ভব ছিল না। টিকিটের লাইনে দাঁড়ানো সেলিনা আক্তার বলেন, ‘আমার সামনে লাইনে কয়েক শ মানুষ দাঁড়িয়ে আছে, আজ টিকিট পাব কি না সেটাই বুঝতে পারছি না। তবু অপেক্ষা করছি। আমাদের জন্য কাউন্টার বাড়ালে সুবিধা হতো। ’
ভোরে টিকিটেরে জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করেও টিকিট পাননি মো. সালাউদ্দিন। তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ট্রেনের টিকিট পাওয়া যায় না জেনে সব সময় বাসেই বাড়ি যাই। কিন্তু এবার বাসের টিকিট পেলাম না। গতকাল খোঁজ নিয়ে শুনি বাসের নাকি সব অগ্রিম টিকিট শেষ। ভোরে কমলাপুরে এসে এখানেও টিকিট পেলাম না। ’
রেলের টিকিটের এমন চাপকে স্বাভাবিক বলে মনে করছেন কমলাপুর রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার। তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার শেষ অফিস হওয়ায় সব মানুষই এই দিনে বাড়ি যেতে চায়। তাই সবাই টিকিট পাবে না, এটাই স্বাভাবিক। ’