বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ২০২২ সালের জুনে কত দাঁড়িয়েছে? বাংলাদেশ ব্যাংকের ঘোষণা অনুযায়ী এ রিজার্ভ ৪১ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলারের আশপাশে থাকবে। কিন্তু আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ এ ঘোষণা গ্রহণযোগ্য মনে করে না। কারণ রফতানি উন্নয়ন তহবিল বা এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফান্ড (ইডিএফ) নাম দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে সরকারের আদেশে বাংলাদেশ ব্যাংক যে সাড়ে ৭ বিলিয়ন ডলারের ‘রিফাইন্যান্সিং স্কিমের’ অধীনে বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে দেশের প্রভাবশালী রফতানিকারকদের বৈদেশিক মুদ্রায় ঋণ দিয়েছে, সেটাকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে অন্তর্ভুক্ত না করতে বলেছে আইএমএফ। তার মানে, বাংলাদেশের প্রকৃত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৩৪ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। এ সাড়ে ৭ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক মুদ্রার অবয়বে আর দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
ঋণগ্রহীতা রফতানিকারকরা ইডিএফ ঋণের মাধ্যমে অর্জিত বৈদেশিক মুদ্রায় তাদের রফতানি আয় ঋণদানকারী ব্যাংকে ফেরত দিচ্ছেন না, তাই প্রায় সব ব্যাংকেই ওই ইডিএফ লোন ‘ফোর্সড লোনে’ (অধিকাংশই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের) পর্যবসিত হচ্ছে। ইডিএফ ফান্ডসংক্রান্ত রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ভয়ঙ্কর তথ্য পাওয়া গেছে। বেসরকারি ব্যাংকের পূর্ণ তথ্য না পাওয়া গেলেও যে খবর মিলছে তা আশঙ্কাজনক। তার মানে ইডিএফ লোন মানি লন্ডারিং প্রক্রিয়ায় বিদেশে পাচার হয়ে গিয়েছে বা যাচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ইডিএফের নামে প্রভাবশালী ব্যবসায়ীদের ঋণ দেয়ার আইডিয়া কার জানি না; কিন্তু পুঁজি পাচারের এমন সহজ হাতিয়ার পুঁজি পাচারকারীদের হাতে তুলে দেয়ার কাহিনী দেশবাসীকে জানানো আমাদের কর্তব্য।