সুনামগঞ্জ ও সিলেটের অপেক্ষাকৃত উঁচু জায়গাগুলো থেকে পানি আস্তে আস্তে নামছে। নিচু এলাকা আর হাওরের গ্রামগুলোর অনেক জায়গায় মানুষ এখনো জলবন্দী। কেউ কাদাবন্দী। সুনামগঞ্জের ১১টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সব কটিতেই বন্যার পানি ঢুকেছে। একতলা তলিয়ে গেছে এসব হাসপাতালের। গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়েছে। একই সঙ্গে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে ঠাঁই নিয়েছিল বানভাসি নিরুপায় মানুষ। তাদের সবাই ফিরতে পারেনি বাড়িতে। এ জন্য পানি নামার সঙ্গে সঙ্গে চট করে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চালু করা যাচ্ছে না। এদিকে ডায়রিয়া এবং নানা পানিবাহিত রোগবালাই নিয়ে রোগীরা ভিড় করছে স্বাস্থ্যকেন্দ্র আর হাসপাতালগুলোতে। জ্বর ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বন্যাকবলিত এলাকায় ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়েছে ৫ হাজার ৮৯০ জন। এর মধ্যে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী সংখ্যা ৪ হাজার ১১৬। ২৪ ঘণ্টায় (২৬/২৭ জুন) ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে ৪৫২ জন। এর মধ্যে সিলেট বিভাগে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২৭৩। ডায়রিয়া ও চর্মরোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সংখ্যা ক্রমে বাড়ছে।
প্রথম আলোর সিলেট প্রতিনিধি সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছেন, ২৮ জুন বেলা ২টা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে ৪৮ জন। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার। এর বড় একটি অংশ শিশু। জেলার গোয়াইনঘাট, বিশ্বনাথ, দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বেশি। এ হিসাব শুধু চিকিৎসাকেন্দ্রে আসা রোগীদের। বেশির ভাগ মানুষের পক্ষে চিকিৎসাকেন্দ্রগুলোতে পৌঁছানো এখনো সহজ নয়। হাসপাতালগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হচ্ছে। জেলার ২৬৩টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১৩৯টি।
বানভাসি মানুষেরা বলছেন, প্রতিদিনই কিছু না কিছু শুকনা খাবার তাঁরা পাচ্ছেন। কিন্তু শুকনা খাবার শিশু ও বৃদ্ধরা এখন আর খেতে চাচ্ছেন না। শুকনা খাবারের টাকায় কিছু চাল ও ডাল দিলে তাঁরা অন্তত একবেলা ভাত খেতে পারতেন।