শুরুতে দুটি উদাহরণ দেব। একটি ১৯৯১-৯২ সালে পশ্চিমবঙ্গর বাস্তবতা, আরেকটি বর্তমানের ইউরোপের বাস্তবতা। আমি ১৯৯১ থেকে ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত গবেষণার কাজে কলকাতা ছিলাম। একটি বাস্তবতায় অভ্যস্ত ছিলাম তখন। একজন বিখ্যাত প্রবীণ ইতিহাসবিদ প্রফেসর অমলেন্দু দে ছিলেন আমার সুপারভাইজর। তার ছাত্ররা ভারতের নানা বিশ^বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছেন। মাঝে মধ্যে ব্যাগ বা কাঁধে ঝোলা নিয়ে একজন প্রবীণ কিংবা প্রবীণা এসে দাঁড়াতেন। হাতে চিঠি। আমরা বুঝতাম স্যারের কোনো একজন অধ্যাপক ছাত্রের চিঠি। নিশ্চয় তাদের গবেষক ছাত্রছাত্রী কোনো তথ্যের ব্যাখ্যায় সংকটে পড়েছেন। সমাধানের জন্য পাঠিয়ে দিয়েছেন স্যারের কাছে। অমায়িক ভালো মানুষ স্যার সময় ঠিক করে দিচ্ছেন কখন আলোচনা করবেন।
স্যারের কাছ জানলাম গবেষকদের অনেকেই হাইস্কুল বা প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক। পশ্চিমবঙ্গে অনেক স্কুলে পিএইচডি ডিগ্রিধারী শিক্ষক রয়েছেন। কলেজ থেকে প্রাইমারি স্কুল পর্যন্ত সব ক্ষেত্রেই মেধাবী ফল করা ছেলেমেয়েরা আনন্দের সঙ্গে শিক্ষক পদের জন্য আবেদনে নামেন। কারণ সবাই জানেন পশ্চিমবঙ্গে শিক্ষকের বেতন কাঠামো আকর্ষণীয়। তাই সরকারি আমলা হওয়াটা জরুরি নয়। আমাদের দেশে বেতন বৃদ্ধির পরও তা সুষম নয়। আমলার সঙ্গে বেতন-ভাতায় বড় বৈষম্য রয়েছে স্কুলশিক্ষকের।