সরকারি পরিষেবার মানোন্নয়নের উদ্দেশ্যে সিটিজেন চার্টার বা নাগরিক সনদের ধারণাটি ১৯৯১ সালে যুক্তরাজ্যের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জন মেজর জাতীয় কর্মসূচি হিসাবে শুরু করেছিলেন। পরবর্তী পর্যায়ে ১৯৯৮ সালে টনি ব্লেয়ার ধারণাটিকে আরও সমৃদ্ধরূপে গ্রহণ করেন এবং এর পুনঃনামকরণ করেন ‘সার্ভিসেস ফাস্ট’ হিসাবে। সরকারি পরিষেবার মানোন্নয়নের জন্য ধারণাটি খুবই কার্যকর হওয়ায় সারা বিশ্বে তা খুবই জনপ্রিয়তা অর্জন করে। বিশ্বের অনেক দেশ ধারণাটি ভিন্ন ভিন্ন নামে ও ভিন্ন ভিন্ন ফর্মে গ্রহণ করে। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও ২০০৭ সালে ধারণাটি গ্রহণ করে একটি পরিপত্র জারি করে। পরবর্তী পর্যায়ে সচিবালয় নির্দেশমালায়ও বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয় ২০১৭ সালে। পরিপত্র জারি থেকে নির্দেশনা জারিতে সময় লাগে প্রায় ৯ বছর। বাংলাদেশে ‘সিটিজেন চার্টারে’র নামকরণ করা হয় ‘সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি’।
বর্তমানে বিশ্বব্যাপী এটি স্বীকৃত যে, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উভয় ধরনের টেকসই উন্নয়নের জন্য সুশাসন অপরিহার্য। সুশাসনের জন্য জনপ্রশাসনে থাকতে হয় স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, দায় স্বীকারের মানসিকতা এবং দ্রুততার সঙ্গে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের সক্ষমতা। আর এসব নিশ্চিতকরণের জন্য সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি অত্যন্ত কার্যকর একটি ব্যবস্থা। তাছাড়া এ ব্যবস্থা সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতি জনগণের আস্থা সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সরকারি পরিষেবার মান উন্নীতকরণ ছাড়াও জনপ্রশাসনকে জনবান্ধব প্রশাসনে পরিণত করাও সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতির অন্যতম উদ্দেশ্য। এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের জন্য সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে অত্যন্ত দক্ষতার পরিচয় দিতে হয়।