রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ কবে শেষ হবে, তা অনুমান করা বেশ কঠিন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, যুদ্ধ প্রলম্বিত হবে। এই যুদ্ধের কারণে সারাবিশ্বে জ্বালানি সংকট ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। টানা বেড়ে চলেছে জ্বালানি তেল, গ্যাস ও কয়লার দাম। মূল্যবৃদ্ধিতে নতুন নতুন রেকর্ড হচ্ছে প্রতি সপ্তাহে। এ সমস্যার সমাধান কোথায়- তা ভাবতে গিয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞরাও রীতিমতো গলদঘর্ম।
আমরা জানি, বিদ্যুৎ উৎপাদনের মূল জ্বালানি গ্যাস, ডিজেল, ফার্নেস, কয়লা ইত্যাদি। বিশ্ববাজারে এই পণ্যগুলোর দাম এখন লাগামহীন। এর মধ্যে ডিজেল ও ফার্নেস পুরোটাই আমদানি করতে হয় বৈদেশিক মুদ্রা খরচ করে। গ্যাস আমদানি করতে হয় ২০ শতাংশ। বাকিটা দেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলোতে থেকেই জোগান দেওয়া হয়। কয়লাও আংশিক আমদানি করতে হয়। তবে কয়লা আমদানি সামনে ব্যাপকভাবে বাড়বে। কারণ রামপালসহ কয়েকটি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হবে শিগগির।
বাংলাদেশ সরকার কালবিলম্ব না করে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাত ৮টায় দোকানপাট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। আমি মনে করি, এটি সঠিক সিদ্ধান্ত। আমাদের দেশে সন্ধ্যা-রাতে বিদ্যুতের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। বিশেষ করে সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত পিক আওয়ার হিসেবে ধরা হয়। দিনের বেলা বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকে। পিক আওয়ারে কমবেশি ৫০০ মেগাওয়াট চাহিদা বেড়ে যায়। দোকানপাটে বিদ্যুতের ব্যবহার বন্ধ করা গেলে কিছুটা হলেও সাশ্রয় করা সম্ভব হবে।সাশ্রয়ের পথ ছাড়া এখন কোনো উপায় নেই। সরকার যদি নির্দেশনা সঠিকভাবে কার্যকর করতে পারে, তাহলে পিক আওয়ারে কয়েকশ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সাশ্রয় করা সম্ভব হবে। এই পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে পরিমাণ জ্বালানি তেল, গ্যাস বা কয়লার ব্যবহার হতো, সেটা সাশ্রয় করা সম্ভব হবে। অর্থাৎ বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করা যাবে। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রা ৪৮ বিলিয়ন ডলার থেকে ৪২ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। রিজার্ভ নিয়ে এখনই আমাদের সতর্ক থাকা উচিত।