দুর্যোগের দেশ বাংলাদেশ। বন্যা হয়, আকস্মিক বন্যা হয়। বন্যার সঙ্গে যুঝেই শত শত বছর ধরে এ দেশের মানুষ বসবাস করে আসছে। কিন্তু এবারে অতি ভারী বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে সিলেট বিভাগে যে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে, তার ভয়াবহতা এককথায় অভাবনীয়। ১২২ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বড় বন্যা হয়েছে সিলেট ও সুনামগঞ্জে। দুই জেলার ৪০ লাখ মানুষ এখন পানিবন্দী। সিলেট ও সুনামগঞ্জের বাইরে আরও ৯ জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে বন্যায়।
গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বন্যার যেসব খবর, ছবি ও ভিডিও পাওয়া যাচ্ছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতি হচ্ছে। সিলেট ও সুনামগঞ্জে উঁচু টিলা আর কিছু রাস্তা ছাড়া পানি ওঠেনি—এমন জায়গা আর অবশেষ নেই। বেশির ভাগ জায়গা কোমর থেকে গলাপানিতে প্লাবিত। একতলা বা আধা পাকা যাদের ঘর, সবার ঘরেই প্রায় গলাপানি। এতটা পানি এসেছে মাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে। পানি যে এতটা বাড়বে, বন্যা যে এত সর্বব্যাপী হবে, সেটা কারও ধারণায় ছিল না। গত বৃহস্পতিবার রাতে সুনামগঞ্জ শহরের বাড়িঘরে বন্যার পানি ঢুকতে শুরু করে। লোকজন স্বাভাবিকভাবেই জিনিসপত্র খাট বা একটু উঁচু জায়গায় রেখে সকাল হওয়ার অপেক্ষা করতে শুরু করে। কিন্তু এরপরই যেন প্রলয় শুরু হয়। পানি হু হু করে বাড়তেই থাকে। এর মধ্যেই বিদ্যুৎ, মুঠোফোন সেবা ও ইন্টারনেট সেবা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। দেখতে দেখতে কোমর থেকে গলাপানিতে ভরে যায় ঘরগুলো। দিশেহারা মানুষের মধ্যে ভয়-আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।