নতুন স্বাভাবিকতায় ব্যাংক খাতের রূপান্তর

বণিক বার্তা ড. শাহ্ মো. আহসান হাবীব প্রকাশিত: ১৮ জুন ২০২২, ০৮:২২

নির্দিষ্ট কিছু ব্যাংক রূপান্তরের ঘটনাক্রম বাংলাদেশের ব্যাংক খাত আধুনিকায়ন ও পরিচালন পদ্ধতিতে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এনেছে, যা দৃশ্যমান হয় মূলত নব্বইয়ের দশকে। এর আওতায় নব্বইয়ের দশকের শুরু থেকে কিছু বেসরকারি ব্যাংক বহুজাতিক ব্যাংকের আদলে পরিচালনগত প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনার উদ্যোগ গ্রহণ করে। মিল থাকলেও ব্যাংক পরিচালন রূপান্তর/আধুনিকায়ন প্রক্রিয়ার ভিন্নতা লক্ষণীয়।


১৯৮৩ সালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে বেসরকারি খাতে প্রতিষ্ঠিত হয় এক বাণিজ্যিক ব্যাংক, যা মাত্র ৩ দশমিক ৪ কোটি টাকা নিয়ে যাত্রা শুরু করে। প্রথম প্রজন্মের ব্যাংক হলেও প্রকৃতির দিক থেকে এটি ছিল প্রথাগত/চিরাচরিত ব্যাংকের মতো। ব্যবসায়ের প্রকৃতি ও পরিচালন প্রক্রিয়া ছিল বিকেন্দ্রীভূত। ব্যাংকে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তির সমাহার ছিল না। অধিকাংশ কর্মী ছিলেন অদক্ষ, যাদের ঝুঁকি নেয়ার কোনো আগ্রহ ছিল এবং লিঙ্গবৈষম্য ছিল প্রকট। ব্যাংকের কর্মকাণ্ডেও বৈচিত্র্য ছিল একবারেই অনুপস্থিত, বলা যায় উপেক্ষিত। গ্রাহকসেবার মান ছিল নিম্নতম। বেতন-ভাতাদিও আকর্ষণীয় ছিল না। ব্যাংকটির শাখা অফিসের বাহ্যিক সৌন্দর্যও ছিল একবারেই অনাকর্ষণীয়। এ রকম পরিস্থিতিতে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ব্যাংকটিতে পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এ পর্যায়ে তারা একজন দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যাংকারকে শীর্ষ পর্যায়ে চালকের আসনে বসাতে সক্ষম হন। নতুন নেতৃত্ব ব্যাংকটিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনেন। ব্যাংকের বিভিন্ন পণ্য ও গ্রাহকসেবার মানোন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়।


নতুন নতুন ব্যাংক সেবা প্রদানের পাশাপাশি দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যাংকার এবং তরুণদেরও নিয়োগ দেয়া হয়। পরিবর্তনের প্রাথমিক পর্যায়ে দক্ষ ও অভিজ্ঞ ব্যাংকারদের পাশাপাশি দেশের মোবাইল কোম্পানিগুলো থেকে বেছে বেছে সেরা কাস্টমার সার্ভিস বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেয়া হয়। ওষুধ কোম্পানিগুলো থেকে বাছাই করা হয় সেরা বিপণন কর্মকর্তাদের। বিদেশী বাণিজ্যিক ব্যাংকে কর্মরত অভিজ্ঞ ব্যাংকারদের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। এভাবেই বিভিন্ন পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ সমন্বয়ে ব্যাংকে একটি মিশ্র সংস্কৃতির জন্ম দেয়া হয়, যাতে কাজে বৈচিত্র্য আনা সম্ভব হয়। ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা, কর্মী নিয়োগ, তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার ইত্যাদি কাজে অবাধ স্বাধীনতা দেয় পরিচালনা পর্ষদ। পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ে ব্যাংকে নেতৃত্বের একটি নেটওয়ার্ক গড়ে ওঠে, যার মাধ্যমে পরিবর্তন, বৈচিত্র্য আনয়ন এবং সংস্কার কর্মসূচি পরিচালনা করা সম্ভব হয়। গ্রাহকের সন্তুষ্টি অর্জনের পাশাপাশি তাদের মনোভাব পরিবর্তনের জন্য স্বল্প সময়ের মধ্যে ব্যাংকের বাহ্যিক অবকাঠামো ও সৌন্দর্যে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়। বিভিন্ন শাখার ক্ষতির মাত্রা নিরূপণ করে বিধিমালা পরিবর্তন করে প্রয়োজনীয় বিধিমালা নির্ধারণ এবং দুর্বল তদারকি ব্যবস্থার উন্নতি সাধন করা হয়। বেশির ভাগ শাখা অফিস স্থানান্তর করা হয় এবং কর্মীদের ব্যাপক প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। শাখাভিত্তিক ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়াকে প্রধান কার্যালয়ে কেন্দ্রীভূত করা হয়। এছাড়া নীতিমালা, কৌশল ও পরিচালন প্রক্রিয়ায় ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়। কয়েক বছরের মধ্যে ব্যাংকটির ব্যবসা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পায়। ব্যবস্থাপনা পর্যায়ে দক্ষ ও সঠিক নেতৃত্ব এবং পরিচালনা পর্ষদের সর্বাত্মক সহযোগিতার কারণে ব্যাংকটি একটি জটিল পরিস্থিতি, বলা যায় ডুবন্ত অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us