বিকল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা জরুরি

সমকাল সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী প্রকাশিত: ১৮ জুন ২০২২, ০৮:১৭

বিশ্বজুড়ে ব্যাপ্ত পুঁজিবাদী ব্যবস্থাটা এখন বর্বরতার শেষ পর্যায়ে চলে এসেছে। পুঁজিবাদমনস্ক অতি নিকৃষ্ট স্তরের মানুষ রাষ্ট্রের কর্তা হচ্ছে, রাষ্ট্রকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে, সঙ্গে রয়েছে ব্যবসায়ীরা। তবে এটা যেমন সত্য, তেমনি সত্য এটাও যে, পুঁজিবাদী ব্যবস্থাটার এখন ভেঙে পড়বে-পড়বে অবস্থায় পৌঁছে গেছে। তার সব খেলা, কৌশল, প্রতিষ্ঠানই এখন দুর্বল হয়ে পড়েছে। ধরা যাক, নোবেল পুরস্কারের কথাই। এই পুরস্কার একসময়ে অত্যন্ত গৌরবজনক ছিল, এখন আর তেমন নেই। বিশেষ করে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের অবস্থাটা তো বেশ কাহিল।


২০১৬ সালে দেখা গেল, দেবার মতো কোনো লেখক নেই, তাই পুরস্কার দেওয়া হলো একজন সংগীত রচয়িতা ও গায়ককে। পরের বছর পুরস্কার দেওয়াই হলো না। কারণ? কারণ দাতা প্রতিষ্ঠানের ভেতরে যৌন কেলেঙ্কারির ঘটনা। ২০১৯ সালে পুরস্কার যে দু'জনকে দেওয়া হয়েছে, জানা গেল, তাঁদের একজন বসনিয়ায় গণহত্যাকে সক্রিয়ভাবে সমর্থন করেছেন। অর্থনীতিতে ওই বছর নোবেল পেয়েছেন তিনজন। এঁদের দু'জন আবার স্বামী-স্ত্রী। স্বামীটি বাঙালি। সেই খবরে বাঙালি মহলে বেশ উৎফুল্লতা দেখা গিয়েছিল। পরে সেটা স্তিমিত হয়ে গেছে। কারণ জানা গেছে, বাঙালি ভদ্রলোক- নাম অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়, নৈতিক দিক থেকে মোটেই প্রশংসনীয় মানের নন। তাঁর প্রথম স্ত্রী ছিলেন বাঙালি, তিনিও উঁচু স্তরের একজন অধ্যাপক ছিলেন। যাঁর সঙ্গে মিলে তিনি পুরস্কারটি পেলেন, তিনি তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী। ফরাসি বংশোদ্ভূত এ নারীটি একদা বন্দ্যোপাধ্যায় মহাশয়ের ছাত্রী ছিলেন; দারিদ্র্য নিয়ে গবেষণা করতে তাঁরা ভারতে কয়েক বছর একত্রে কাটিয়েছেন। তা ছাত্রীটিকে বিয়ে করতে ওই শিক্ষকের বিশেষ রকমের আগ্রহ যে ছিল তা নয়; কিন্তু না-করে উপায় থাকেনি। কেননা ছাত্রী ঘোষণা করে দিয়েছিলেন, তিনি মা হতে যাচ্ছেন এবং তাঁর ভাবী সন্তানের পিতা অন্য কেউ নন, তাঁর শিক্ষক মহাশয়ই। ফলে প্রথম স্ত্রী পরিত্যক্ত হয়েছেন। সে-স্ত্রী ইংল্যান্ডে চলে গেছেন একমাত্র পুত্রসন্তানকে সঙ্গে নিয়ে। ঘটনা ধারার অত্যাচারে পুত্রটি মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং এক সময়ে আত্মহত্যাই করে ফেলে।


সেটা গেল পারিবারিক তথ্য। এ নিয়ে আমাদের কোনো দুশ্চিন্তার কারণ নেই। তবে লক্ষ্য করার বিষয় হলো, তাঁর চিন্তাধারা, যেটি খাঁটি পুঁজিবাদী এবং যেটির প্রচারে তিনি সবেগে অংশ নিচ্ছেন। তাঁর বইপত্র পড়বার সুযোগ এখনও আমাদের হয়নি। তবে সাক্ষাৎকার পড়ে বিলক্ষণ জানা গেছে, তিনি কোন ঘরানার মানুষ। পুঁজিবাদী তো হবেনই, না-হয়ে উপায় নেই। কিন্তু মনে হচ্ছে, বেশ কট্টরপন্থি। যেমন তিনি বলেছেন, উন্নয়নের জন্য দুর্নীতি কোনো অন্তরায় নয়। অর্থাৎ প্রকারান্তরে বলা যে, উন্নতি চাইলে দুর্নীতি মেনে নিতে হবে, যে বাণীর উচ্চারণ আমরা নিম্ন, উচ্চ, নীরব কণ্ঠে অহরহ শুনছি, বাধ্য হচ্ছি শুনতে। তিনি আরও একটা কথা বলেছেন, বর্তমান সময়ে সারাবিশ্বে বেশি আদর পাচ্ছে অতি ধনীরা এবং অতি গরিবরা। যত কষ্ট মধ্যবিত্তের। মধ্যবিত্ত যে কষ্টে আছে এবং অতি ধনীরা যে আদর পাচ্ছে, সেটা তো আমাদেরও অভিজ্ঞতা। কিন্তু অতি গরিব? হ্যাঁ, তারাও আদর পায়। তাদের জন্য এনজিও আছে, দাতারা আছে, এমনকি স্বীয় ব্যথায় কাতর মধ্যবিত্তও রয়েছে। কিন্তু এই ব্যবস্থাটা যে ভাঙা দরকার, অন্ততপক্ষে অধিকার ও সুযোগের সাম্য প্রতিষ্ঠা যে অত্যাবশ্যক, সেটা তো আমরা খুবই অনুভব করি। তবে ভরসা রাখি, এ ব্যবস্থাটা ভাঙবে; ভাঙবে এই জন্য যে, বঞ্চিত মানুষের সংখ্যাই অধিক এবং তারা এ ব্যবস্থা মেনে নেবে না, মেনে নিচ্ছে না। 

সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন
ট্রেন্ডিং

সংবাদ সূত্র

News

The Largest News Aggregator
in Bengali Language

Email: [email protected]

Follow us