বড় ফ্যাকড়া। বেশ ফ্যাকড়া। বলতে পারেন, ফ্যাকড়ার ওপর ফ্যাকড়া। বিষয়টি হচ্ছে, মানিকজোড় হলো লম্বা গলা ও পা-বিশিষ্ট পাখি, যাদের আবার ভারী, শক্ত ও মোটা চঞ্চু, মানে ঠোঁট আছে। এরাৎ সাইকোনিডি গোত্রের অন্তর্গত। অ্যান্টার্কটিকা ছাড়া পৃথিবীর সবখানেই এদের দেখা মেলে। আবার বাংলা অভিধান বলছে, দুজন অন্তরঙ্গ এবং সব সময় একসঙ্গে থাকা বা চলাফেরা করা মানুষকেও মানিকজোড় বলা হয়। প্রথম ফ্যাকড়াটা এখানে। কোথায় পাখি আর কোথায় মানুষ। তাও একসঙ্গে চলাফেরা করা দুজন মানুষ। তাও আবার বাঙালি, যারা দুজন থাকলে তিনটি দল তৈরি করে। মেলে কীভাবে? আর দ্বিতীয় ফ্যাকড়া? চিত্তচাঞ্চল্যকর সে ফ্যাকড়া বিষয়ে এই লেখা পড়তে পড়তেই বুঝে যাবেন।
খিচুড়ি-ভাজি-ভুনা-ভর্তা
বলছিলাম, খাবারদাবারের সঙ্গে মানিকজোড় শব্দটির ভাবগত যোগ খুব গভীর বটে। দেখবেন বর্ষা এলেই লোকে খেতে শুরু করে খিচুড়ি। ল্যাটকা-ঝাটকা ভুনা-টুনা মানে কল্পনায় যত রকম খিচুড়ি খাওয়া সম্ভব, এ সময় বাঙালি সবই খায়। জগাখিচুড়ি তো বটেই। সঙ্গে আবার থাকতে হবে ঝাল-ঝাল ভাজা কিংবা ঝাল-ঝাল ভুনা কিছু একটা। সেটা হতে পারে ঝাল-ঝাল ডিম ভাজা, ইলিশ ভাজা, ঝাল-ঝাল ড্রামস্টিক মানে মুরগির রান ভাজা কিংবা খাসি বা গরুর গরম-গরম ঝাল ভুনা। নিদেনপক্ষে শুকনো লাল মরিচ তেলে ভেজে নিয়ে সেটা দিয়ে আলুর ভর্তা—জিভেয় ছোঁয়ালেই যা ছ্যাঁৎ করে উঠবে ঝালের ঠেলায়। তাহলে বিষয়টি দাঁড়াল, বর্ষার সঙ্গে খিচুড়ি মানিকজোড়। আর খিচুড়ির সঙ্গে ভাজা, ভুনা বা ভর্তার সম্পর্কও তাই।