সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কে এম নূরুল হুদা নীরবতা ভেঙেছেন। গত ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সিইসির দায়িত্ব থেকে বিদায় নেওয়ার পর তিনি এত দিন চুপ ছিলেন। কোনো গণমাধ্যম বা অনুষ্ঠানে কথা বলেননি। লোকলজ্জা বলেও একটা কথা আছে। তবে সেই লোকলজ্জার পর্দা সরিয়ে ৪ জুন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে সাবেক সিইসি বলেছেন, ‘দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন একটি স্পর্শকাতর ও চ্যালেঞ্জিং বিষয়। রাজনৈতিক দল, প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সার্বিক সহযোগিতা ব্যতীত শুধু নির্বাচন কমিশনের পক্ষে সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব নয়।’ (ইত্তেফাক, ৫ জুন, ২০২২)
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি না এলে সেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে সাবেক সিইসি বলেন,‘ বিএনপি একটি বড় রাজনৈতিক দল। তাই বিএনপিকে বাদ দিয়ে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা হলে সে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না।’ তাঁর এই বক্তব্য শুনে মেঘনাদ-বধ কাব্যের সেই বিখ্যাতি উক্তিই মনে পড়ে, ‘এতক্ষণে অরিন্দম কহিলা বিষাদে।’ মহাকাব্যে কথাটি বলেছিলেন রাবণ তাঁর চাচা বিভীষণকে উদ্দেশ্য করে। বিভীষণই লক্ষ্মণকে নিয়ে আসেন নিকুম্ভিলা যজ্ঞাগারে। আর বাংলাদেশের নির্বাচনী যজ্ঞাগারে কে এম নূরুল হুদাকে কে নিয়ে এসেছিলেন এবং তার পরিণতি কী হয়েছিল, তা দেশবাসীর জানা।
মোদ্দাকথা নির্বাচনী ব্যবস্থাটি ধ্বংস করে এখন কে এম নূরুল হুদা সাহেব নির্বাচন নিয়ে দেশবাসীকে উপদেশ দিচ্ছেন।সিইসি পদে থাকা অবস্থায় তিনি এই সাধু ও অতি আবশ্যকীয় সদুপদেশ মনে রাখলে নির্বাচনী ব্যবস্থাটি ধ্বংস হতো না। তিনি এখন সেই ধ্বংসস্তূপের ওপর বসে নির্বাচন কীভাবে সুষ্ঠু হবে তার পথ বাতলাচ্ছেন। কেএম নূরুল হুদা পাঁচ বছর প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছিলেন। সেই পাঁচ বছরে জাতীয় নির্বাচন ছাড়াও স্থানীয় সরকার সংস্থার কয়েক হাজার নির্বাচন হয়েছে। এর মধ্যে দুই একটি ব্যতিক্রম ছাড়া কোনোটি সুষ্ঠু হয়নি।