পরিবেশ সংরক্ষণে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য প্রতিবছর ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হয়। বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য প্রাকৃতিক সম্পদের যথেচ্ছ ব্যবহার পরিবেশ বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহারের মাত্রা প্রকৃতির পুনরুৎপাদন মাত্রার চেয়ে বেশি হওয়ায় আমাদের পরিবেশ প্রতিনিয়ত ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। পরিবেশ বিপর্যয়ের এ অবস্থার উন্নয়নে ১৯৭২ সালে সুইডেনের স্টকহোমে প্রথম আন্তর্জাতিক পরিবেশ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সে সম্মেলনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৯৭৩ সাল থেকে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হয়ে আসছে। আন্তর্জাতিকভাবে ইউনাইটেড নেশনস এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম (ইউএনইপি) বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালনের বিষয়টি সমন্বয় করে থাকে। ইউনেপ প্রতিবছর একটি প্রতিপাদ্য নির্বাচন করে সমগ্র বিশ্বকে এ বিষয়ে গণসচেতনতা বৃদ্ধিসহ পরিবেশ সংরক্ষণে কার্যক্রম গ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানায়। পাশাপাশি পরিবেশ বিপর্যয় রোধে আন্তর্জাতিক জনমত গঠন ও সহযোগিতা বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করে। বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পরিবেশ কনভেনশনে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্র হিসেবে বেশ ঘটা করে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালন করে।
বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২২-এর প্রতিপাদ্য 'একটাই পৃথিবী :প্রকৃতির ঐকতানে টেকসই জীবন'। বর্তমানে সারাবিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, পরিবেশদূষণ এবং প্রাকৃতিক সম্পদের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার টেকসই উন্নয়নের জন্য অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রকৃতির ঐকতানে টেকসই জীবন আমাদের সবার কাম্য হলেও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধি সব উন্নয়নশীল দেশের জন্য সর্বোচ্চ আরাধ্য বিষয়। যে কারণে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলো অর্থনৈতিক উন্নয়নকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে। ফলে পরিবেশ সংরক্ষণের বিষয়টি গৌণ হয়ে যায়। বাংলাদেশও এই ধারাবাহিকতার ব্যতিক্রম নয়। মাত্রাতিরিক্ত গ্রিন হাউস গ্যাস নিঃসরণে পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৈশ্বিক এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে সমগ্র বিশ্বের জলবায়ুর পরিবর্তন হচ্ছে, যা মোকাবিলা করা মানব জাতির জন্য বর্তমান সময়ের বড় চ্যালেঞ্জ। যে কোনো সময়ের চেয়ে আমরা এখন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থার মধ্যে রয়েছি। শুধু প্রকৃতির ঐকতানে টেকসই জীবন নিশ্চিত করতে পারলেই এ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব হবে।