যে পরিবেশে কেকে-কে গান গাইতে হয়েছে কলকাতায়, তা কি আদৌ এক শিল্পীর প্রাপ্য?
সংগীতশিল্পী কেকে-র মৃত্যু নিয়ে তোলপাড় কলকাতা-সহ গোটা দেশ। মঙ্গলবার দুপুরেও যে মানুষ সহশিল্পীদের সঙ্গে সেলফি তুলে বিমানে উঠলেন, সন্ধ্যায় গান গেয়ে মাতিয়ে দিলেন শহর কলকাতা, রাতে কীভাবে মৃত্যু হলো তার? চিকিৎসকেরা বলছেন, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে শিল্পীর। ঠিক। কিন্তু যে পরিবেশের মধ্যে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কেকে-কে গান গাইতে হলো, তা কি অভিপ্রেত ছিল?
বস্তুত, মঙ্গলবার রাত থেকেই এই প্রশ্ন নিয়ে উত্তাল হয়ে উঠেছে সমাজমাধ্যম। কী বলছেন তারা?
গুরুদাস কলেজের ফেস্ট উপলক্ষে গান গাইতে এসেছিলেন মুম্বইয়ের বিশিষ্ট শিল্পী। তাকে নিয়ে এসেছিলেন শিল্পী মহলে জনপ্রিয়, আয়োজক তোচন ঘোষ। কলকাতার প্রাণকেন্দ্রে ঐতিহ্যপূর্ণ একটি পাঁচতারা হোটেলে তাকে রাখার ব্যবস্থা হয়েছিল। এই পর্যন্ত আয়োজনে কোনো ত্রুটি ছিল না। কিন্তু এর পর থেকে যা যা ঘটেছে, তা কখনোই অভিপ্রেত নয়।
কলকাতার একটি বড় প্রেক্ষাগৃহ নজরুল মঞ্চ। একসঙ্গে দুই-আড়াই হাজার দর্শক সেখানে বসে গান শুনতে পারেন। কেকে যখন সেখানে গিয়ে পৌঁছান,ততক্ষণে ভিড় উপচে পড়েছে। প্রেক্ষাগৃহে উপস্থিত এক দর্শক ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, কেকে গাড়ি থেকে নামতে পারছিলেন না। তার গাড়ির সামনে জোয়ারের মতো হামলে পড়ছিল মত্ত জনতা। বেশ খানিকক্ষণ গাড়িতেই বসে থাকতে হয় তাকে।
বিশিষ্ট ব্যক্তিদের এমন জনতা দেখার অভ্যাস আছে। কেকে-র তো আছেই! দীর্ঘদিন ধরে তিনি লাইভ অনুষ্ঠান করেছেন এবং দর্শকদের মাতিয়ে রেখেছেন। সেই কেকে-ও ওই মত্ত জনতার সামনে গাড়ি থেকে নামতে ভয় পেয়েছেন।
কেকে-র ঠিক আগে যে স্থানীয় শিল্পী ওই মঞ্চে গান গেয়েছেন, সংবাদমাধ্যমকে তিনি জানিয়েছেন, কোনোমতে কেকে-কে ঘিরে ধরে গ্রিনরুমে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় দরজা। কিন্তু ততক্ষণে প্রেক্ষাগৃহে সমস্ত শৃঙ্খলা ভেঙে পড়েছে। পিল পিল করে দর্শকের স্রোত ঢুকতে থাকে হলের ভিতর। ওই প্রেক্ষাগৃহের এক সূত্র ডয়চে ভেলেকে জানিয়েছেন, প্রায় সাত হাজার মানুষ ঢুকে পড়েন হলের ভিতর। প্রেক্ষাগৃহের পাঁচটি দরজা খুলে দিতে হয়। ওই ভিড়ে, প্রবল গরমে বাতানুকূল যন্ত্রও কাজ করছিল না ঠিক মতো।