একদিকে বাজারের উত্তাপ গনগনে উনুনে রূপ নিচ্ছে। অন্যদিকে আমরা বারংবার শুনে চলেছি সাশ্রয়ী ও মিতব্যয়ী হওয়ার নিদান। জনগণকে নসিহত দেওয়া হচ্ছে বুঝে-শুনে খরচ করার। এই প্রেসক্রিপশন দেনেওয়ালারা সব ক্ষেত্রে সেটি মেনে চলার কথা বলছেন তো?
জনগণকে সাশ্রয়ী ও মিতব্যয়ী হওয়ার কথা বলা হচ্ছে বর্তমান বাজারের অবস্থা নিয়েই। সরকারের পক্ষে মন্ত্রী পর্যায় থেকেই এমন উপদেশ আমরা পাচ্ছি সম্প্রতি। খাদ্যমন্ত্রী, বাণিজ্যমন্ত্রীর এমন আহ্বান জানানোর খবর সংবাদমাধ্যমেও এসেছে। হ্যাঁ, বিশ্ব বাজারের অবস্থা সত্যিই ভালো নয়। বিশেষজ্ঞরা কেউ কেউ বলছেন, বৈশ্বিক পর্যায়ে একটি অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি হতে পারে। সেই আশঙ্কা প্রবলভাবেই আছে। এর মূল কারণ হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটকে। বলা হচ্ছে, এই সংকটের কারণে পুরো পৃথিবীতেই খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থা বাধাগ্রস্ত হতে পারে। ফলে খাদ্যসংকট দেখা দেওয়াও বিচিত্র নয়। বিশ্বায়নের তোড়ে সেই সংকট বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে যেতেও সময় লাগবে না। এরই মধ্যে বিশ্ব বাণিজ্যও অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে।
অস্থিরতার সেই ধাক্কা আসছে আমাদের দেশেও। ডলারের দাম বাড়ছে হু হু করে। আর ঠিক তখনই সাধারণ জনগণের পকেটে টান পড়ছে। আজকের পত্রিকার খবরে বলা হয়েছে, দাম বাড়ার দৌড়ে চাল-ডাল-তেলের সঙ্গে তাল মেলাচ্ছে অন্যান্য সব পণ্য। কীসের দাম বাড়েনি! এক মাসের ব্যবধানে সুগন্ধি সাবান, কাপড় কাচার পাউডার, হেয়ার ওয়েল, হ্যান্ডওয়াশ, বিস্কুট, গুঁড়ো দুধ, পাউরুটি, চানাচুর, এয়ারফ্রেশনার, অ্যারোসলসহ সবকিছুর দাম বেড়েছে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে অনেকে যে ইসবগুলের ভুসি খান, বাদ যায়নি তার দামও। একটু মৌজ করে চানাচুর খেতে চাওয়াতেও এখন সাশ্রয়ী হতে হচ্ছে। প্যাকেটজাত বিস্কুট, পাউরুটি ও চানাচুরের দাম বেড়ে গেছে। এমনকি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতাও এখন কম পয়সায় মিলবে না! কারণ টিস্যু, এয়ারফ্রেশনার, অ্যারোসল ও টয়লেট ক্লিনারের দামও ঊর্ধ্বমুখী।