কোনো হই-হুল্লোড় ছাড়াই সরকার পরিবর্তন হয়ে গেল এ দেশে। অস্ট্রেলিয়া বলে নয়, যেসব দেশে গণতন্ত্র আর ভোটাধিকার আছে, তাদের সবার বেলায় এমন হয়। গত সপ্তাহান্তে এমন নীরব পরিবর্তনে সাবেক প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন ডুবেছেন তার দল লিবারেলকে নিয়ে। এমনটা হওয়ার কথা ছিল না। মহাদেশের সমান এই দেশে জনসংখ্যা অপ্রতুল। মাত্র ২ কোটির বেশি মানুষের দেশে জিততে হলে ৭৬টি আসনই যথেষ্ট।
টেক্কা দিয়ে লড়াই করলেও তিন-তিনবারের বিজয়ী দল শেষ পর্যন্ত হেরে গেছে। লেবার দলের এই বিজয় জনগণের মনোভাব আর পরিবর্তনের বিজয়। আসলে করোনার ভয়াবহ আঘাতে বিপর্যস্ত দুনিয়ায় সব দেশই কোনো-না-কোনোভাবে আঘাতপ্রাপ্ত। সমাজ-সংসার-রাষ্ট্র—সর্বত্র বিপন্নতা আর হাহাকার। সন্দেহ নেই সে পরিবেশ পেরিয়ে এসেছে বিশ্ব। আমাদের এই অস্ট্রেলিয়াও বাদ পড়েনি। হিমশিম খাওয়া লিবারেল দলের বিদায়ি প্রধানমন্ত্রী মরিসন শেষ পর্যন্ত সাহায্য-সহায়তা-অনুদান দিলেও এর জন্য সময় নিয়েছিলেন।
কড়া কড়া অনেক কথাও বলতে হয়েছিল তাকে। সে কথা আর দেরি তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আমাদের দেশের সঙ্গে এসব দেশের সমাজের পার্থক্য এক জায়গায় প্রবল। এখানে দেশ পাশে না দাঁড়ালে, সরকার সাহাঘ্য না করলে মানুষের বাঁচা অসম্ভব। উন্নত দেশে পরিবার বলতে যা-ই বোঝাক না কেন, মা-বাবা, ভাইবোনও কেউ কাউকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে না। সেটা সম্ভবও না। ডিজাইনটা এমন—সবাই স্বতন্ত্র আর স্বনির্ভর। তাই করোনার সময় অসহায় নাগরিকদের পাশে দাঁড়াতে দেরি করার ফল ভালো হয়নি।