বিশ্ববাজারে জ্বালানি ও খাদ্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় আমদানিতে আমাদের অতিরিক্ত ডলার ব্যয় করতে হচ্ছে। এ ছাড়া মহামারি-উত্তর সময়ে শিল্পের মধ্যবর্তী পণ্য আমদানিও বেড়ে গেছে। তাতে বাণিজ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া অর্থনীতিতে গতি আসায় বিদেশে ব্যক্তিগত ভ্রমণ বেড়েছে। ফলে দেশে ডলারের ব্যাপক চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ পড়েছে। এ অবস্থায় সরকার বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ের লক্ষ্যে সম্প্রতি সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধাসরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফরের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে। ঠিক একই কারণে বেসরকারি বা ব্যক্তিগত পর্যায়েও বিদেশ সফরে লাগাম টানা উচিত। চিকিৎসা ও শিক্ষার উদ্দেশ্য ছাড়া সব ধরনের বিদেশ ভ্রমণে নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা দরকার। সংকট কাটিয়ে না ওঠা পর্যন্ত উপযুক্ত কারণ ছাড়া কাউকে বছরে একবারের বেশি বিদেশে যেতে না দেওয়া উচিত হবে।
আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ার আশঙ্কা কমবেশি সবার মধ্যে কাজ করছে। তবে নীতিগত কিছু বিষয় আমাদের রক্ষা করতে পারে। তাই যতক্ষণ পর্যন্ত রিজার্ভ একটি স্বস্তিকর পর্যায়ে না আসে, বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয়ের সব উপায় কাজে লাগাতে হবে। এই রিজার্ভ এখনো বাংলাদেশের অর্থনীতির বড় শক্তি। যত দিন এটা ধরে রাখা যাবে, তত দিন বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হবে না। কিছু ব্যয় যেহেতু অবধারিত, তাই মুদ্রা সাশ্রয়ে মনোযোগী হতেই হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমাদের আমদানি করতে হবে এবং এর বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতেই হবে। এ ছাড়া বৈদেশিক ঋণের দেনার বিপরীতেও বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হবে। ফলে সরকার বিলাসদ্রব্য আমদানি নিয়ন্ত্রণ এবং সরকারি ও আধাসরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিদেশ সফরের ওপর যে বিধি-নিষেধ জারি করেছে, সেটা সময়োপযোগী ও যথাপোযুক্ত হয়েছে।