করোনাভাইরাস ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে সৃষ্ট বৈশ্বিক সংকট এক ধরনের ঝাঁকুনি দিচ্ছে দেশের অর্থনীতিকে। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে দেশের আগামী এক বছরের আয় ও ব্যয় নিরূপণের (বাজেট প্রণয়ন) কাজ। এরসঙ্গে সার্বক্ষণিক যুক্ত আছেন অর্থমন্ত্রী সরকারের বিভিন্ন স্তরের নীতিনির্ধারকসহ সংশ্লিষ্টরা। সেখানে বড় দুটি বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলার কৌশলই গুরুত্ব পাচ্ছে। যার প্রতিফলন থাকছে আসন্ন বাজেটে। বিশেষ করে বিভিন্ন খাতে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমাতে থাকবে কৃচ্ছ সাধনের ঘোষণাও। পাশাপাশি নানা পদক্ষেপ রাখা হবে খাদ্য দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে। আর গরিব মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেওয়ার মতো কর্মসূচির ব্যাপ্তি বাড়ানোর উদ্যোগ। যে কোনো ঘটনা মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসাবে বাড়ানো হচ্ছে অপ্রত্যাশিত খাতে বরাদ্দও। থাকছে করপোরেট ছাড়ের ঘোষণা।
তবে সংকট, শঙ্কা ও টানপোড়েনের মধ্যেও আগামী বছরে প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৫ শতাংশ অর্জনের প্রত্যাশা করছেন অর্থমন্ত্রী। এই প্রবৃদ্ধি অর্জনের ব্যাপারে প্রত্যাশা দেখিয়ে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সম্পাদকদের সঙ্গে সম্প্রতি প্রাক-বাজেট বৈঠকে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘সংকট যখন জানালা দিয়ে আসে তখন একটি সম্ভাবনার দরজা খুলে যায়।’
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বৈশ্বিক সরবরাহ সংকটে ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়ছে লাগামহীনভাবে। এতে মূল্যস্ফীতির হার লক্ষ্যমাত্রাকে ছাড়িয়ে গেছে। বড় ধরনের চাপ সৃষ্টি হয়েছে জ্বালানি তেল ও কৃষকের সারের ভর্তুকিতে। পাশাপাশি কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাবে কর্মসংস্থান ও বিনিয়োগের ওপর ‘কালো মেঘের ছায়া’ পুরোপুরি কাটেনি। এতে হতদরিদ্র, নিম্ন আয়ের মানুষ, শিক্ষিত বেকার ও সব শ্রেণির ভোক্তাসহ ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা সংকট থেকে বের হতে পারছেন না। এসব বিষয়কে সামনে রেখে মোটা দাগে আগামী বাজেটে সংকট মোকাবিলা ছাড়াও আরও কয়েকটি বিষয়কে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।