বিশ্ব এখন ক্রমেই জটিলতর হয়ে উঠছে। ২২২টির মতো রাষ্ট্র আমাদের এই গ্রহে রয়েছে। জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত রাষ্ট্রের সংখ্যা ১৯৩টি। বাকি রাষ্ট্রগুলো জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত কেন নয়, তার নানা কারণ হয়তো রয়েছে। তবে আধুনিক বিশ্বের রাষ্ট্রগুলো নিজস্ব সার্বভৌমত্ব, সরকার এবং সাংবিধানিক বিধিব্যবস্থায় পরিচালিত হওয়ার কথা। যদিও রাষ্ট্রের চরিত্র, সরকারব্যবস্থা এবং সাংবিধানিক রূপের মধ্যে ভিন্নতা রয়েছে। তারপরও স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রসমূহ নিজস্ব রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধারাতেই প্রবাহিত হচ্ছে।
আধুনিক-পূর্ব যুগে রাষ্ট্র ও সরকারের চরিত্র ছিল অনেকটাই ভিন্ন। গত এক-দেড় শ বছরে পৃথিবীতে রাষ্ট্র চরিত্রের ব্যাপক পরিবর্তন হয়েছে। বিশেষত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তরকালে পৃথিবীতে স্বাধীন রাষ্ট্রের একটি নতুন ঐতিহাসিক বাস্তবতা তৈরি হয়েছে। উপনিবেশবাদের শৃঙ্খল থেকে মুক্ত হয়ে এশিয়া এবং আফ্রিকা মহাদেশে নতুন নতুন স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটেছে। লাতিন আমেরিকায় ১৯ শতকের প্রথমার্ধে ৩০টির মতো রাষ্ট্র ঔপনিবেশিক শক্তির হাত থেকে মুক্ত হয়েছে। স্বাধীন এসব রাষ্ট্র আক্ষরিক অর্থে পরাধীনতা থেকে মুক্ত হলেও বিশ্বের শক্তিধর রাষ্ট্রের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাববলয় থেকে কতটা মুক্ত হতে পেরেছে, সেটি মস্ত বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ স্বাধীন রাষ্ট্রই স্বাধীনভাবে বিকশিত হওয়ার সুযোগ পায়নি। আধুনিক রাষ্ট্র গঠিত হওয়ার সমস্যা কত জটিল এবং আর্থসামাজিক, রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে অতিক্রম করে অগ্রসর হতে হয়, তা প্রতিটি রাষ্ট্রের ভিন্ন ভিন্ন তথা নিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকেই কেবল বোঝা যায়।