বাংলাদেশের সদ্যসমাপ্ত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ‘প্রহসনের ভোট’ আখ্যা দিয়ে মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের এডিটোরিয়াল বোর্ড সোমবার একটি সম্পাদকীয় প্রকাশ করে।সম্পাদকীয়টিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিগত ১০ বছরের সাফল্যের প্রশংসা করা হয়। মাথাপিছু আয় ১৫০ গুন্ বৃদ্ধি, চরম দারিদ্র ১৯ শতাংশ থেকে ৯ শতাংশে নেমে আসার বিষয়গুলোকে উল্লেখ করা হয়। তবে, প্রধানমন্ত্রীর সকল অর্জন নির্বাচনে একতরফা জয়ের কারণে ম্লান হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। নির্বাচনের আগে থেকেই স্থানীয় ও মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিরোধী পক্ষকে হুমকি, গ্রেফতারের সমালোচনা করে আসছিলো। নির্বাচনী প্রচারণায় কমপক্ষে ১০ জন নিহত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এর একটি উদ্বৃতি তুলে ধরা হয় - ‘বিচার বিভাগ বা নির্বাচন কমিশনের বাধা ছাড়া সমাজের প্রতিথযশা থেকে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতি ছড়ানোর একটি আবহ।’নিউ ইয়র্ক টাইমস গত ডিসেম্বরে দ্য টাইমসকে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর এক সাক্ষাৎকারের উদ্বৃতি দেয়, যেখানে তিনি বলেন, ‘আমি যদি খাদ্য, চাকুরী, স্বাস্থসেবার ব্যবস্থা করতে পারি- তবে সেটাই মানবাধিকার। বিরোধী দল, সুশীল সমাজ, এনজিও কি বললো- তা নিয়ে আমি চিন্তিত নোই। আমি আমার দেশকে চিনি, আমি জানি কিভাবে দেশের উন্নয়ন করতে হয়।’এরপরই সম্পাদকীয়টিতে প্রশ্ন তোলা হয়েছে- যেখানে সাম্প্রতিক জরিপে শেখ হাসিনার জয়লাভের সমূহ সম্ভাবনা ছিল, সেখানে কেন এই অর্থহীন নির্বাচনী ফলাফল। শেখ হাসিনার সকল অর্জন ম্লান হয়ে গেলো তার কর্তৃত্ববাদী পদ্ধতি এবং দমনমূলক আচরণের কারণে। এখন তার নির্বাসিত বা আত্মগোপনে থাকা বিরোধীরা আরো কট্টর এবং বিদেশী সমর্থকরা আরো সতর্ক হয়ে উঠবে।লেখাটিতে নির্বাচন নিয়ে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অসন্তুষ্টির কোথাও উল্লেখ করা হয়।লেখাটির সমাপ্তি টানা হয় এই বলে, সাম্প্রতিককালে শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত যে গতিপথ, তাতে এধরণের উপদেশ দিয়ে তাকে নড়ানো যাবে না। কিন্তু বাংলাদেশের সাথে ব্যবসা করছে এবং দরিদ্রতা হ্রাসের কারণে উত্সাহিত করছে এমন মিত্রদের মনে রাখতে হবে যে মানবাধিকার কোনো আরোপিত বেমানান সংস্কৃতি নয়, বরং এটি উন্নয়ন ও অগ্রগতির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।