আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দুর্নীতি এবং অর্থ পাচারের ঘটনার দীর্ঘ তালিকায় একটি নাম পিকে (প্রশান্ত কুমার) হালদার। সম্প্রতি ভারতে গ্রেফতার হওয়ার পর নামটি পুনরায় আলোচনায় এসেছে; কিন্তু পিকে হালদারের মতো আরও অনেক নাম, অনেক দুর্নীতি, অর্থ পাচারের ঘটনা এ দেশে নিয়মিত ঘটে চলেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে শুরু করে রাষ্ট্রায়ত্ত কিংবা বেসরকারি-প্রায় প্রতিটি ব্যাংকের বিরুদ্ধে দুর্নীতি এবং অর্থ পাচারের অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি থেকে শুরু করে রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংক, সোনালী ব্যাংক, অগ্রণী ব্যাংক কিংবা বেসরকারি এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক বা রিলায়েন্স ফাইন্যান্স-কোনো দুর্নীতি, অর্থ লোপাট বা অর্থ পাচারের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি। সরকারের পক্ষ থেকে প্রায় প্রতিটি ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।
গ্লোবাল ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রতিবছর গড়ে ৬৪ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, ২০১৬ থেকে ২০২০, পাঁচ বছরে পাচারকারীরা ৩ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে; যার মধ্যে শুধু ২০১৫ সালে ১ বছরেই দেশ থেকে পাচার হয়ে যায় ৯৮ হাজার কোটি টাকা। এ পাচার হয়েছে ব্যাংকিং চ্যানেলে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যের আড়ালে। তার মানে ব্যাংকিং খাতে দুর্নীতির সিকিভাগও আমাদের সামনে আসেনি। আর যেগুলো এসেছে, কোনো এক অজ্ঞাত কারণে সরকার সেগুলোর সুষ্ঠু তদন্ত করেনি। অজ্ঞাত কারণ বললে অবশ্য ভুল হবে। কারণ প্রত্যেকেরই জানা। আর্থিক খাতে দুর্নীতির প্রতিটি ঘটনার সঙ্গে সরকার বা সরকারি দলসংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নাম যুক্ত থাকায় তদন্ত বেশিদূর এগোতে পারেনি।