তাসলিমা বেগম রেনুর কথা মনে আছে আমাদের? কয়েক বছর আগে উত্তর-পূর্ব বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছেলেধরা সন্দেহে একদল লোক স্রেফ পিটিয়ে মেরে ফেলেছিল তাকে। বিষণ্নতাসহ আরও কিছু মানসিক সমস্যায় আক্রান্ত তাসলিমাকে যখন মানুষ পিটিয়ে মেরে ফেলছিল, তখন মৃত্যুর আগে তিনি বারবার বলছিলেন– ‘আমি ছেলেধরা না’।
যারা সেই সময় খবরটি পড়েছিলাম, একদফা মার খাওয়া রেনুর রক্তাক্ত মর্মান্তিক মুখটি দেখেছিলাম, তাদের তীব্র কষ্ট হয়েছিল সেটা দেখে। ‘ছেলেধরা নয়’ এমন একজন নারীকে পিটিয়ে মেরে ফেলা আমাদের বিবেককে জাগিয়ে তুলেছিল। ঘটনাটির বিচার চলছে আদালতে। প্রশ্ন হচ্ছে রেনু যদি সত্যিই ছেলেধরা হতেন?
কিছু দিন আগে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম কোনও গণপিটুনিতে মানুষ হত্যার রায় হলো। ১০ বছর আগে সাভারের আমিনবাজারের বড়দেশী গ্রামে একটি গণপিটুনিতে হত্যার ঘটনা দেশব্যাপী ভীষণ আলোড়ন তোলে। সাত বন্ধু শবে বরাতের রাতে ঘুরতে গিয়েছিলেন আমিনবাজারের সেই গ্রামে। গভীর রাতে স্থানীয় কিছু দুর্বৃত্ত তাদের ডাকাত বলে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে। এতে ছয় জন মারা যান, একজন প্রাণে বাঁচেন। দীর্ঘ ১০ বছরের বিচারিক প্রক্রিয়া শেষে ২ ডিসেম্বর সেই মামলায় ১৩ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ১৯ জনকে দেওয়া হয় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। আর খালাস দেওয়া হয় ২৫ জনকে। আচ্ছা, তখন গণপিটুনিতে হত্যাকাণ্ডের শিকাররা যদি সত্যিই ডাকাত হতো?