বাংলাদেশের অর্থনীতি অদূর ভবিষ্যতে কী ধরনের সংকটে পড়তে পারে তা নিয়ে দ্য ডেইলি স্টারের বাণিজ্য পাতায় আজ থেকে পাঁচ মাস আগে একটি বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন ছাপা হয়েছিল। এতে তিনটি সম্ভাব্য সংকটের ওপর জোর দেওয়া হয়। মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনার অসঙ্গতি এবং ব্যাংকগুলোতে ক্যাশ টাকার অপ্রতুলতাকে প্রধান সংকট হিসেবে দেখানো হয়েছিল।
এই সমস্যাগুলো এখনও অর্থনীতিতে বিদ্যমান। কিন্তু, সবকিছু ছাড়িয়ে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনার সংকটটি প্রধান সমস্যা হিসেবে এখন বাংলাদেশের সামনে আবির্ভূত হয়েছে।
বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবস্থাপনার সংকট এড়াতে বেশ কিছু প্রস্তাবনা ছিল ওই প্রতিবেদনে। তার মধ্যে অন্যতম ছিল, তাৎক্ষণিকভাবে ডলারের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার মান অন্তত ৩ টাকা অবমূল্যায়ন করা। বিষয়টির ওপর দ্য ডেইলি স্টারের একাধিক প্রতিবেদনে জোরও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এটি নিয়ে তেমন কোনো গুরুত্ব দেয়নি। অবাক করা বিষয় ছিল বাংলাদেশের প্রথিতযশা প্রায় সব অর্থনীতিবিদের কাছ থেকে টাকার তাৎক্ষণিক অবমূল্যায়ন নিয়ে কোনো ইতিবাচক মন্তব্যও পাওয়া যায়নি। কেননা, ডলারের বিপরীতে টাকার শক্তিশালী মান বজায় রাখা এই দেশে একটি জনপ্রিয় কর্মসূচি হিসেবে বিবেচিত। কারণে-অকারণে টাকার মান শক্তিশালী রাখতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংক। ধারণা করা হয়, এর মাধ্যমে বহির্বিশ্বে দেশের ইমেজ উজ্জ্বল হয়।
ডিসেম্বরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ঘোষিত আন্তঃব্যাংক লেনদেন অনুযায়ী এক ডলারের বিপরীতে ৮৫ দশমিক ৮০ টাকা পাওয়া যেত। এখন এক ডলার সমান ৮৬ দশমিক ৭০ টাকা। অর্থাৎ গত পাঁচ মাসে ডলারের বিপরীতে স্থানীয় মুদ্রার মান এক টাকারও কম অবমূল্যায়ন হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অবমূল্যায়ন করা হয়েছে গত এক মাসে।