বাদী-বিবাদী কারও পক্ষে না দিয়ে একবার মামলার জমি দিয়েছিলাম পক্ষ না থাকা সর্বসাধারণের পক্ষে। উড়ো খই গোবিন্দায় নমঃ! এ কেমন বিচার! দুই পক্ষের মামলার বাইরে নতুন একটা ‘থার্ড কেস’ তুলে বিচার চলে না আইনে। আরও অনেক কথাই বলেছিল বিবদমান দুই পক্ষ আমার রায়টার বিরুদ্ধে রিভিশনে হাইকোর্টে গিয়ে। ধোপে টেকেনি তাদের কথা, আমার রায়টাই টিকেছে। হাইকোর্টের রায়ের কপি পেয়ে দিনাজপুরের যুগ্ম জেলা জজ ২০১৯-এর মে মাসে এক দিন খবরটা জানালেন। দিনাজপুর গিয়েছিলাম সাব-জজ অর্থঋণ হয়ে ২০০০-এর জুলাইয়ের শেষদিকে। ২০০১-এ সাব-জজটা বদলে হয় যুগ্ম জেলা জজ, অর্থঋণটা জোড়াই রইল সঙ্গে। ২০০২-এর নভেম্বরে বদলি হয়ে চলে আসি সেখান থেকে। সে বহুকাল আগে, ভুলেই গিয়েছিলাম রায়টার কথা। মনে পড়ল তার কাছে শুনে। দিঘি নিয়ে মামলার একটা আপিল ছিল, আবছা মনে পড়ছে। মামলার বৃত্তান্ত পুরোটা আর নেই মনে। হাইকোর্টের আর আমার রায়ের কপি চেয়ে নিয়েছিলাম তার থেকে। তারপর চাপাই পড়েছিল এত দিন। মনে জাগল এ বছর মে মাস না আসতেই তেঁতুলতলা মাঠে সর্বসাধারণের ব্যবহারাধিকারের দাবা-দাবির (নাদাবি নেই কারও) খবরাখবর দেখেশুনে।
কাগজপত্র না দেখে তো বলা যায় না কিছু। তেঁতুলতলার কাগজপত্র কোথায় পাব! আমি না বিচারী না বিপ্লবী! দিনাজপুরীও নই বটে, তবে চেয়ে পাওয়া কপিগুলো তো আছে। দেখলাম সেগুলো খুলে। দেওয়ানি আপিল (সিআরও-এর নিয়মে হয় ‘আদার ক্লাস আপিল, দিনাজপুরে বাংলায় লেখে ‘অন্য আপিল’) একটা, ১৯৯৩ সালের। ২০০০-এর ১৭ সেপ্টেম্বর উভয় পক্ষ শুনে সাত দিনের মাথায় (আইনে বাঁধা সময়ের মধ্যে থাকার স্বভাবটা ছিল গোড়া থেকে) রায় দিই ২৪ সেপ্টেম্বর। আমার সেখানে তখন সবে দেড় মাস চলছে। আপিলটার চলে গেছে সাতটা বছর, নিষ্পত্তি বিহনে। সময় দিয়ে-নিয়ে এতগুলো বছর পার করে গেছে সবাই মিলে। একটু চেপে ধরলেই হয়, না ধরলে তো হতো না আমারও হাতে।