রেলমন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয় দিয়ে বিনা টিকিটে ট্রেন ভ্রমণকারী যাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে ট্রাভেলিং টিকিট এগজামিনারকে (টিটিই) বরখাস্ত করা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। এরই মধ্যে ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করেছে পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে। সেই কমিটি বরখাস্ত হওয়া টিটিই শফিকুল ইসলামকে আজ তলব করেছে।
বিনা টিকিটে ভ্রমণের দায়ে রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর তিন আত্মীয়কে জরিমানা করায় টিটিই বরখাস্তের ঘটনাকে ন্যক্কারজনক দৃষ্টান্ত বলে অভিহিত করেছে দুর্নীতিবিরোধী আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল অব বাংলাদেশ (টিআইবি)। সংস্থাটি এ ঘটনায় রেলমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করেছে।
তবে রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন শনিবার গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, বিনা টিকিটে ভ্রমণকারীদের সঙ্গে আমার কোনো আত্মীয়তার সম্পর্ক নেই। বিনা টিকিটে ভ্রমণ করা যেমন শাস্তিযোগ্য অপরাধ, তেমনি যাত্রীদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার বা জোর করে অর্থ আদায় করাও শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
যাত্রীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করায় এবং অতিরিক্ত টাকা নিয়ে টিকিট না দেওয়ায় টিটিইর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে খোঁজ নিয়ে ও সেই তিন যাত্রীর একজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে রেলমন্ত্রীর স্ত্রী শাম্মী আক্তারের বোনের ছেলে অভিযোগকারী ইমরুল কায়েস প্রান্ত। আর তার ট্রেনযাত্রার সঙ্গী হাসান ও ওমর হলেন শাম্মীর মামাতো ভাই। শাম্মীর পরামর্শেই তারা ট্রেনে উঠেছিলেন।
সূত্র জানায়, ঈশ্বরদী শহরের নূর মহল্লায় তাদের বাড়ি। ঈশ্বরদীতে বোন নিপার বাসায় ঈদ উদযাপন করেন হাসান ও ওমর। নিপার ছেলে প্রান্তকে শাম্মী নিজের সন্তানের মতো দেখেন।
হাসান জানান, আমরা ঢাকায় যাওয়ার জন্য ট্রেনের টিকিটের জন্য বুকিং অফিসে যাই। সেখানে টিকিট না পেয়ে বিষয়টি আপুকে জানাই। আপু আমাদের যাওয়ার জন্য সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনে তিনটি টিকিট দেওয়ার জন্য দায়িত্বরত গার্ড শরিফুল ইসলামকে মোবাইল ফোনে বলেন।
এরপর আমরা ট্রেনের একটি বগিতে উঠি। এর কিছুক্ষণ পরই টিটিই শফিকুল ইসলাম এসে আমাদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করেন। প্রান্ত জানান, আমি ঢাকায় একটি টেক্সটাইল মিলে চাকরি করি। ছুটি শেষ হওয়ায় ঢাকায় আমাকে যেতেই হবে। টিকিট না পেয়ে ট্রেনে উঠেছিলাম।
টিটিইকে দেখেই আমি টিকিট চেয়েছি। টিটিই টাকা নিয়ে টিকিট লাগবে না বলে জানান। কিন্তু আমি টিকিট চাওয়ায় তিনি অশ্রাব্য ভাষায় কথা বলেন। এমনকি ট্রেন থেকে লাথি দিয়ে ফেলে দিতে চান। তাকে আমার মাদকাসক্ত মনে হয়েছে।